বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ১১:১১ অপরাহ্ন

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের পাঁচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

বান্দরবান প্রতিনিধি:: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরাপত্তাজনিত কারণে পাঁচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল মান্নান এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা।

শিক্ষা অফিসার আবদুল মান্নান জানান, সকাল থেকে মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকার অভ্যন্তরে গোলাগুলি বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্ত এলাকার বাইশ ফাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম কুল তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা বলেন, সীমান্তে গুলাগুলি এবং অস্থিরতা অব্যাহত থাকায় ৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অঘোষিত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি এরকম থমথমে থাকলে কালকেও বন্ধ থালতে পারে।

বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী বলেন, সীমান্ত আজকেও গুলাগুলি চলছে। একারণে একটি মাদ্রাসা মিশকাতুন্নবী মাদ্রাসায় কোন শিক্ষার্থী না আসায় সেটি বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য স্কুলগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে শিক্ষার্থী খুবই কম। সীমান্তে ৩ টি স্কুল রয়েছে সেখানে রাস্তা বন্ধ থাকায় তুমব্রু থেকে শিক্ষার্থীরা আসতে পারেনি।

এর আগে সকালে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন দুই বাংলাদেশি। এতে সীমান্তে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে আতঙ্কে তুমব্রু সীমান্তের কাছে দুই গ্রামের প্রায় ৩ হাজার বাংলাদেশি অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, রাত থেকে এখনও মুহুর্মুহু গুলি ও মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ চলছে মিয়ানমার সীমান্তে। এ ঘটনায় পশ্চিম পাড়ার ফরিদ আলমের বাড়িতে গুলি এবং কোনাপাড়া ইউনুছের বাড়িতে মর্টার শেলের খোসা এসে পড়ে। এতে টিন ছিদ্র হয়ে খোসাটি বাড়ির ভেতরে এসে পড়ে। তবে বাড়িতে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এ ঘটনার আগে থেকেই কোনাপাড়ার বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় চলে গেছেন। সবমিলিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভয়ে লোকজন ঘর থেকে বেরও হচ্ছেন না।

এদিকে, রোববার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের তুমব্রু এলাকার বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন মিয়ানমারের ১৪ সীমান্তরক্ষী। ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, মিয়ানমারের বিজিপির সদস্যরা তুমব্রু সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

অন্যদিকে, সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। তিনি জানান, এ ঘটনায় আমরা সীমান্তের কয়েকটি সড়কে সাময়িকভাবে যান চলাচল সীমিত করে দিয়েছি এবং সীমান্ত লাগায়ো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।

এছাড়া মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করায় দেশের সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। এরই মধ্যে নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com