শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:১২ অপরাহ্ন

নবাবগঞ্জে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিককে হত্যার পর গুম, গ্রেপ্তার ২

নবাবগঞ্জে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিককে হত্যার পর গুম, গ্রেপ্তার ২

দোহার নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:: ঢাকার নবাবগঞ্জের বাসিন্দা অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক রেহানা পারভীনকে স্বামীর যোগসাজশে অপহরণের পর হত্যা ও গুম করা হয়। ঘটনার প্রায় দুই মাস পর তাঁর লাশ খুঁজে পায় পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যা ও গুমের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার দুপুরে নবাবগঞ্জ থানা মিলনায়তনে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহমেদ মুঈদ এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন।

পুলিশ সুপার বলেন, রেহানা পারভীনের সাথে তাঁর স্বামী আওলাদ হোসেনের সাংসারিক টানাপোড়ন চলে আসছিলো। গত ৬ জুন অস্ট্রেলিয়া হতে স্বামীসহ দেশে ফিরে রেহানা। এর মধ্যে শ্বশুর বাড়ি ও আত্মীয় স্বজনের বাসায় কয়েকদিন বেড়াতে থাকে। এরপর তাঁকে স্বামীর বোনের বাসা আশুলিয়ার নয়াহাট মৌনদিয়া চৌরাপাড়া নিয়ে হত্যার পর লাশ মাটিতে পুঁতে রাখে। ঘটনার পর স্বামী আওলাদ হোসেন অস্ট্রেলিয়া চলে যায়। এর পর তাঁকে খুজে না পেয়ে ভিকটিমের মা আইরিন আক্তার আগস্ট মাসের ৩১ তারিখে নবাবগঞ্জ থানায় জিডি করেন। একই সময়ে অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ ও হাই কমিশন ইন্টারপোলের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরে রেহানার তথ্য চেয়ে বার্তা পেরণ করে।

এঘটনায় গত ৮ সেপ্টেম্বর রেহানার মা বাদী হয়ে নবাবগঞ্জ থানায় অপহরণ ও নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে। এরপর নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ মামলা তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে ঢাকা জেলা পুলিশের সিনিয়র এএসপি আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের ননদ পাপিয়া আক্তার ও রেহানার প্রতিবেশী নবাবগঞ্জের পাতিলঝাপ গ্রামের আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এরপর তাঁদের দেয়া তথ্যমতে লাশের সন্ধান পান পুলিশ। বৃহষ্পতিবার রাতে আশুলিয়া থানার নয়াপাড়া থেকে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় রেহানার লাশ খুঁজে পায় পুলিশ। এসময় লাশটি অর্ধগলিত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এ দিকে নিহতের স্বামী আওলাদ হোসেন স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ গুম করে ১৩ জলাই অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান। সে নবাবগঞ্জের ছোট রাজপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। তাঁদের দাম্পত্য জীবনে তিন ছেলে ও ২ কণ্যা সন্তান রয়েছে।

এ বিষয়ে নিহতের মা আইরিন আক্তার বলেন, তাঁর মেয়ের নামে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে। এসব আত্মসাৎ করতেই পরিকল্পিতভাবে খুনি আওলাদ, পাপিয়া ও আমজাদসহ অন্য সহযোগীরা তাঁর মেয়েকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। তিনি তাঁর মেয়ের হত্যাকারী দের বিচার চেয়ে ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় রেহানার বাবা লেহাজউদ্দিনসহ স্বজনরা থানায় উপস্থিত ছিলেন।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নুর খান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com