বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন
মাহবুবুর রহমান টিপু, দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার দোহার উপজেলার মুকসুদপুর ইউনিয়নের ধীৎপুর এলাকার জলিল শেখের ছেলে শেখ জুলহাসসহ পরিবারের আরও ৪ সদস্যকে বসতঘরে তালাবন্ধ করে দূর্বৃত্তরা আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ভোররাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে বর্বর, মধ্যযুগীয় কায়দায় বসতঘরের বাহির থেকে তালাবন্ধ করে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে একটি পরিবারকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে দূর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় সংবাদ পেয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানীয়রা পাকা ঘরের দরজা ও গোসলখানার পাকা ওয়াল ভেঙ্গে ঘরে থাকা আহতদের উদ্ধার করেন।পরে দোহার থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সহযোগীতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয়েছেন একই পরিবারের পাঁচজন। এরা হলেন, শেখ জুলহাস (৫১), তার স্ত্রী ফাহিমা বেগম(৩৭), ছেলে জুনায়েত (১০),মেয়ে জান্নাত (১৩) ও জুলহাসের ভাই মুক্তারের মেয়ে তায়েবা (১০)। তারা সকলেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
প্রত্যাক্ষদর্শী প্রতিবেশি জাহাঙ্গীর শেখ, বাচ্চু মিয়া ও শফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার ভোররাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে জুলহাসের ঘরে আগুন লাগার পরে তাদের আর্তচিৎকারে উঠে দেখি দাও দাও করে আগুন জ্বলছে।
এ সময়ে আমরা সকলেই তাদেরকে ঘর থেকে বের করতে গিয়ে দেখি লোহার গেটে বাহির থেকে বড় তালা মেরে রাখা হয়েছে। পরে ঘরের ওয়াল ও গোসলখানার ওয়াল ভেঙে তাদেরকে উদ্ধার করি। এ ঘটনায় সবাই শাইনপুকুর পুলিশ ফাঁড়ি ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেই। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন কিভাবে লেগেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে জানান, কে বা কাহারা শেষ রাতের দিকে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে তা আমরা জানিনা। তবে এই আগুন পেট্রোল দিয়ে ধরানো হয়েছে। কারণ হিসেবে ঘটনাস্থল থেকে ৫টি ১০ লিটারের গ্যলন পাওয়া গেছে এবং সেগুলো থেকে পেট্রোলের গন্ধ আসছে।
দোহার ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন ইনচার্জ তামিম হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৫টি ১০ লিটারের তেলের গ্যলন পাওয়া গেছে এবং সেগুলো থেকে পেট্রোলের গন্ধ আসছে।বিষয়টি দোহার থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দোহার থানা ওসি মো.হারুন-অর-রশিদ বলেন, সংবাদ পেয়ে ভোররাতেই দূর্ঘটনাস্থলে আমি উপস্থিত ছিলাম।ধারনা করা হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। আমরা এ ঘটনায় উন্নত প্রযুক্তি সেবা নিয়ে অপরাধীদের সনাক্ত করতে চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ ঘটনায় আহতরা এবং তার পরিবারের সদস্যরা মুখ খুলছেন না এবং সম্ভাব্য কোন সন্দেহের কথা প্রকাশ করছেন না। আহতের সবাই কমবেশী আগুনে দগ্ধ হয়েছে।হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ প্রদান করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক। আহতরা একই পরিবারের ৫ জন, এখনও আতংকিত রয়েছেন বিধায় তারা দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী।
এবিষয়ে জানতে আহত জুলহাস ও তার ভাই মুক্তারের কাছে জানতে চাইলে তারা ভয়ে মুখ খুলছেন না। এ বিষয়ে উপজেলা ত্রান-দূর্যোগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানান, সকালেই তার অফিস সহকারীকে ঘটনাস্থলে সম্ভাব্য ক্ষতির হিসেব সিতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচ লাখ টাকার বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করা হয়েছে।