শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) সংবাদদাতা::
তেঁতুলিয়ায় ইজিবাইক ও যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইজিবাইকের ৭ যাত্রী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুই দম্পত্তি রয়েছে। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলেই ৫ জন এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও ২ জন মারা যান।
শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া জাতীয় মহাসড়কের মাগুড়মারির টিটিহি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- পঞ্চগড় উপজেলার সদর ইউনিয়নের সুরিভিটা এলাকার আকবর আলী (৬৮) ও তার স্ত্রী নুরিমা বেগম (৫৪), তেঁতুলিয়া উপজেলা শালবাহান মাঝিপাড়া এলাকার লাবু ইসলাম (৩০) তার নববধূমুক্তি (২১), পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের চেকরমারি এলাকার ইজিবাইক চালক রফিক (২৯), একই উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের রায়পাড়া এলাকার ফরহাদ হোসেন মাকুদ (৪৬) ও সাতমেরা ইউনিয়নের সাহেবজোত এলাকার আকবর আলীর স্ত্রী নার্গিস আক্তার (৪৩)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পঞ্চগড় থেকে কাজী ব্রাদার্সের একটি যাত্রীবাহী বাস তেঁতুলিয়া আসার পথে মাগুড়মারির আমতলী টিটিহি এলাকায় একটি ছাগলকে পাশ কাটাতে গিয়ে বাসটি বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইজিবাইককে ধাক্কা দিলে ইজিবাইকটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকের মধ্যে থাকা দুই দম্পত্তিসহ ৫ জন নিহত হন। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় আরও দুইজনকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তারা মারা যান। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে এবং বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যেতে দেয়। এই দুর্ঘটনার জন্য তারা হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি ও ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন। পরে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার ইউসুফ আলী ও জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ঐ এলাকার ইউ’পি চেয়ারম্যান মহসীন-উল-হক বলেন, যাত্রীবাহী বাসটি একটি ছাগলকে পাশ কাটাতে গিয়ে ইজিবাইকটিকে ধাক্কা দেয়। ইজিবাইটি দুমরে মুচরে যায়। ওই অবস্থাতেই ইজিবাইকটিকে প্রায় একশ মিটার ছেচরে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই আমরা ৫জনের লাশ উদ্ধার করি। বাকি দুজনকে পঞ্চগড় হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়।
ওই এলাকার মতিউল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজির কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে ব্যর্থ। তিনি মহাসড়কে পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধ করার দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী জাকির হোসেন জানান, ড্রাইভারের অসচেতনা ও লাগামহীন গতির কারনে এই দূর্ঘটনা ঘটে।
পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। বাস চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলেছি। নিহত প্রতি পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে তাৎক্ষণিক অর্থসহায়তা দেয়া হয়েছে।