বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন

তিস্তার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় ফসলি জমিগুলো নতুন জীবন পেয়েছে

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: পানি বৃদ্ধির কয়েকদিনের ব্যবধানে তিস্তা নদীর পানি নেমে নদীটি এখন পানি শুন্যতে পরিণত হয়েছে। তবে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় জমির ফসলগুলোতে এখন প্রাণ ফিরেছে। সেই সাথে তিস্তা পাড়ের কৃষকদের মাঝে প্রানচাঞ্চল্য দেখা গেছে। অথচ ৫ দিন আগেও তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তার আশপাশের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছিল।

সোমবার (২৬ জুন) দুপুর ১২টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ৬৩ মিটারের (৫১.৫২ মিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় (বিপদসীমা ৫২.১৫ মিটার)।

এর আগে সকাল ৯টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫৯ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

৭ দিনের মাথায় তিস্তার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীর আশপাশের ফসলি জমি গুলো এখন নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘদিন বৃষ্টিহীন আবহাওয়ার পর পানি পেয়ে ফসলগুলো তাজা হয়ে উঠেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য মতে, গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। এ কারণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট কয়েকদিন খুলে রাখা হয়েছিল। ফলে নদীর আশপাশের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হলেও এখন পানি কমতে শুরু করায় নদীতে চাষকৃত কৃষি পণ্যগুলো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, খরস্রোতা তিস্তা নদী বর্তমানে প্রায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। নদীর কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পানি দেখা যায়। ফলে হারিয়ে গেছে তিস্তার সেই চিরচেনা সৌন্দর্য।

এদিকে নদীতে ফসলি জমি ও চর ভেসে ওঠায় কৃষক ও নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এখন তারা আবারও নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। তিস্তায় শেষ সম্বল হারিয়ে উঁচু এলাকায় চলে যাওয়া পরিবারগুলো আবার চরে ফিরতে শুরু করেছে। আর কৃষকরাও নতুন করে ফসল চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

তিস্তা চরাঞ্চলের বসবাসকারীরা জানান, তিস্তায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে জেগে উঠেছে বেশ কিছু চর। তিস্তা এখন আর নদী নয় এটি মরা খালে পরিনত হয়েছে। তিস্তা নদী এখন বিস্তীর্ণ আবাদি জমি। তিস্তার বুকে মাছ ধরতে নৌকা নিয়ে ছুটে চলা মাঝিমাল্লাদেরও এখন আর দৌড়ঝাঁপ দেখা যায় না। তবে অল্প কয়েকটি নৌকা খেয়া পারাপারের কাজ করছে।

কালমাটি এলাকার সামসুল আলম বলেন, ‘আমার ৮ বিঘা জমির ফসল নদীতে ডুবে গিয়েছিল। সেখানে ধানের বীজতলা, বাদাম ও ভুট্টা ছিল। কিন্তু পানি কমায় সেগুলো আবার ভেসে উঠেছে। আশা করছি যদি আর পানি না বাড়ে তাহলে এসব ফসল ঘরে তুলতে পারব।

লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় সাধারণ মানুষ বন্যার আশঙ্কা করেছিলেন। কিন্তু পানি কমায় সে আসঙ্কা এখন কেটে গেছে। ডুবে যাওয়া কৃষি জমিগুলোও ভেসে উঠেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com