রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন
একুশের কণ্ঠ ডেস্ক:: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে ভিসির বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ভিসি বলেন, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, সেটিই বহাল থাকবে এবং প্রত্যেক হল প্রশাসন এই নীতিমালার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত হল কমিটি নিয়েও সংগঠনের নেতাদের সাথে আলোচনার আশ্বাস দেন তিনি। তবে শিক্ষার্থীরা ভিসির এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে হলে ছাত্ররাজনীতির সম্পূর্ণ অবসান দাবি করেন।
এসময় তারা ছয় দফা দাবি তুলে ধরে। দাবিগুলো হচ্ছে-
১। ছাত্রদল কেন কমিটি দিলো ভিসিকে জবাব দিতে হবে।
২। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, বামসহ হলে এক্সিসটিং গুপ্ত কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে।
৩। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতির সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে ছাত্ররাজনীতির পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দিতে হবে।
৪। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব হল কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে।
৫। হল প্রভোস্টদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে।
৬। দ্রুত ডাকসু বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঢাবি শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন হল ইউনিটে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুপুর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে, সেখানে ছাত্রদলের প্রকাশ্য কমিটি ঘোষণা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়।
বিশেষ করে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা প্রথমে আন্দোলনে নামেন। সন্ধ্যার পর আন্দোলনের মাত্রা বাড়তে থাকে এবং রাত ১২টার পর টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হন।
রাত ২টার দিকে ঢাবি ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে বাসভবনের সামনে আসেন। এ সময় তাদের সাথে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। পরে ভিসি বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’
ভিসির ওই বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। তারা হলে হলে শিবিরের ‘গুপ্ত কমিটি’ প্রকাশ ও ছাত্রদল কমিটির সদস্যদের শাস্তির দাবিও জানান। পরে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ স্পষ্টভাবে ঘোষণা দেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে।
এই ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা হাততালি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং স্লোগান দেন— এই মুহূর্তে খবর এল, হল পলিটিকস নিষিদ্ধ হলো। পরে রাত ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে ফিরে যান।