মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:১০ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার, ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ ২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার চলমান বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের (ডিপিএল) সুপার লীগের দ্বিতীয় রাউন্ডে সবার নজর ছিল বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠের দিকে। কারণ এখানেই চলতি আসরে প্রথমবারের মতো মাঠে নেমেছেন দেশের দুই অন্যতম তারকা তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে দু’জন মুখোমুখি হয়েছেন এদিন বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে। তামিম মাত্র ৮ রান করেই সাকিবের স্পিনে সাজঘরে ফিরেছেন।
৩৩ ওভারে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের দরকার ছিল ১৫৩ রান। মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসানরা হারতে বসেছিলেন প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের কাছে। আর সেই উইকেটটি নিয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৩৫০ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়েছেন সাকিব। বল হাতে ২ উইকেট নিতে পারলেও অবশ্য ব্যাট হাতে সাকিব ২১ রানেই আউট হয়ে যান। ১৪ রান করলেই হয়ে যেত লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৮ হাজার রানও। তবে সাকিব সেই রেকর্ডটি করতে না পারলেও তামিমের ব্যর্থতার দিনে ইতিহাস গড়েছেন এনামুল হক বিজয়। চলতি আসরে ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছোটানো এ ওপেনার এদিন ৭৩ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের এক আসরে সর্বাধিক ৮৭৮ রান করে নয়া ইতিহাস গড়েছেন।
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে বৃহস্পতিবার সকালে ছিল মিলন মেলা। বৃষ্টির কারণে অনুপযুক্ত মাঠে খেলা শুরু হয়েছে দেরিতে। সেই সুযোগে সাকিবের সঙ্গে তামিম, বিজয়, নাসির হোসেন, ৩ নম্বর মাঠে খেলতে আসা আবাহনী লিমিটেডের অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা জমিয়ে আড্ডা দিয়েছেন। পরে খেলা শুরু হলে ৩৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে প্রাইম ব্যাংক। কিন্তু বিজয়-তামিমের উদ্বোধনী জুটি ভেঙ্গেছে ২১ রানেই। ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করা তামিম চতুর্থ ওভারে সাকিবের ঘূর্ণিতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ৫ বলে মাত্র ৮ রানে। এর মাধ্যমে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৩৫০ উইকেটের মালিক হয়ে যান সাকিব। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক ৪৩৭ উইকেট মাশরাফি বিন মর্তুজার। তিনি খেলেছেন ৩১৬ ম্যাচ।
একপ্রান্ত আগলে বিজয় ৯১ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় ৭৩ রানে ২৯তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন আলআমিন হোসেনের পেসে। এর মাধ্যমে চলতি আসরে বিজয়ের ব্যাট থেকে ১২ ম্যাচে এসেছে ৭৩.১৬ গড়ে ৮৭৮ রান। বাংলাদেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট ইতিহাসে এটিই এক আসরে কোন ব্যাটারের সর্বাধিক রান। এর আসে সর্বাধিক ৮১৪ রান করেছিলেন ওপেনার সাইফ হাসান।
পরের ওভারে শাহাদাত হোসেন দীপুকে ফেরান নাবিল সামাদ। তৃতীয় উইকেটে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার মিশনে ছিলেন মুমিনুল হক ও বিজয়। কিন্তু ১২তম ওভারে আক্রমণে এসেই মুমিনুলকে ফিরিয়ে দেন মাশরাফি। মুমিনুল করেন ১৬ বলে ১৩ রান।
এর মাঝে ব্যক্তিগত ১০ রান নেওয়ার সময় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে ফেলেন বিজয়। চলতি আসরের উড়ন্ত ফর্ম ধরে রেখে ফিফটি হাঁকান তিনি। বিজয়ের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে হাল ধরেন ইয়াসির আলি রাব্বি। এ দুজনের জুটিতে আসে ৬৭ রান।
বিজয়ের বিদায়ের পর ইয়াসির রাব্বি ৩৭ বলে ২ ছক্কায় ৩৯ রান করতে পেরেছেন। কিন্তু বাকিদের ব্যর্থতায় প্রাইম ব্যাংক ৩১.২ ওভারে গুটিয়ে যায় ১৫২ রানে। ২৪ ঘণ্টা আগে দেশে ফেরা সাকিব ৭ ওভারে ১ মেডেন দিয়ে ১৯ রানে ২ উইকেট নেন।
ইনিংসের ২৯তম ওভারে আউট হন বিজয়। তার ব্যাট থেকে আসে ৯১ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ের মারে ৭৩ রানের ইনিংস। পরের ওভারে চিরাগ জানির বলে বোল্ড হন ৩৭ বলে দুই ছয়ের মারে ৩৯ রান করা ইয়াসির রাব্বি। এ দুজনের কল্যাণেই মূলত দেড়শ ছাড়ায় প্রাইম ব্যাংক।
লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের পক্ষে দুইটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা ও চিরাগ। সাকিব নিজের কোটার সাত ওভারে এক মেইডেনসহ মাত্র ১৯ রান খরচ করেন, নেন তামিম ইকবাল ও নাসির হোসেনের উইকেট।
তিনি মোহামেডানের হয়ে ২০০১ সালে ৯৪.৩৮ গড় ও ১১২.২৫ স্ট্রাইকরেটে ওই রান করেন ১৬ ইনিংসে। একই আসরে সিটি ক্লাবের হয়ে পাকিস্তানের ওয়াসিম নাঈম ৯৯০ ও বাংলাদেশ বিমানের হয়ে পাক ব্যাটার মাজিদ সাঈদ ৯১২ রান করেন। আর ২০১১-১২ লীগে ১৬ ইনিংসে ৯৫১ রান করেন মুশফিকুর রহিম।