রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:০৬ অপরাহ্ন
বশির আহাম্মদ, বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি:: অনিন্দ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ঘেরা পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সুউচ্চ পাহাড় আর অসংখ্য ঝিরি ঝর্ণার সমারোহে দেশের লাখো পর্যটকের হৃদয়ে গেথে আছে বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি। দীর্ঘদিন পর টানা সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক বন্ধ থাকার কারনে ইট পাথরের নগর ছেড়ে অনেকেই প্রকৃতি আর পাহাড়ের মাঝে খানিকটা সময় কাটাতে পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে অবকাশ যাপন কিংবা পিকনিক উদযাপনে ছুটে আসছেন পাহাড় কণ্যা বান্দরবানে। এতে আবারো চাঙ্গাভাব ফিরেছে বান্দরবানের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়।
আগত পর্যটকদের অনেকেই এক দিনের জন্য পরিবার পরিজন আর বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরতে আসেন বান্দরবানে, তাদের পছন্দের তালিকায় থাকে জেলা সদরের কাছের পর্যটন কেন্দ্র নীলাচল, নীলগিরি, মেঘালয়, শৈল প্রপাত। এ সকল পর্যটন স্পটগুলো প্রায় একদিনেই ভ্রমণ করা যায়। পর্যটনকেন্দ্র গুলোর টিকেট কাউন্টার গুলোতে চাপ সামলাতে কর্মীদের বেগ পোহাতে হচ্ছে। টানা তিন দিন সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় জেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। হোটেল মোটেল, রিসোর্টগুলোতেও অগ্রীম রুম বুকিং দিয়ে আসতে শুরু করেছে পর্যটক।
এদিকে টানা ছুটিতে দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে থাকা আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট,পরিবহন, টুরিস্ট গাইড ব্যবসা সহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা গুলোতে ফিরেছে ব্যস্ততা।
সরজমিনে দেখা যায়, জেলা সদরের কাছাকাছি উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্র মেঘলা ও নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশমুখে রাস্তার দুই পাশেই বিভিন্ন জেলা হতে আগত পর্যটকবাহী বাস ও প্রাইভেটকারের সারিবদ্ধ লাইন। ময়মনসিংহ জেলা থেকে বান্দরবানে পিকনিকে আশা গিয়াস উদ্দিন জানালেন সকল পর্যটন স্পটগুলো খোলা থাকায় বান্দরবানে এসেছেন পাহাড় দেখতে। অগ্রীম আবাসিক হোটেলে রুম বুকিং থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি।
হোটেল গার্ডেন সিটির স্বত্বাধিকারী মোঃ জাফর বলেন, টানা সরকারি ছুটির কারনে বিপুলসংখ্যক পর্যটক এসেছে, আবাসিক রুম গুলো আগে থেকেই অগ্রীম বুকিং হয়ে গেছে। টানা ৪-৫ দিন এমনটা থাকবে। জেলার সকল পর্যটন স্পটে ঘোরার সুযোগ থাকায় পর্যটকের সমাগম আরো বারবে। বান্দরবান আবাসিক হোটেল রিসোর্ট অনার্স অ্যাসোসিয়েশন এর সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, পর্যটন ব্যবসায় কিছুটা চাঙ্গা ভাব ফিরতে শুরু করেছে। সরকারি ছুটি গুলোতে স্বাভাবিক ভাবেই পর্যটকের আনাগোনা বেশি থাকে। সাম্প্রতিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক অস্তিরতা না থাকলে এই সেক্টরের দীর্ঘদিনের মন্দা ভাব কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।
এদিকে জেলায় আগত অনেক পর্যটকের ভ্রমনের পছন্দের তালিকায় থানচি উপজেলার রেমাক্রি ফলস, তিন্দু, বড় পাথর এবং রোয়াংছড়ি উপজেলার দেবতাখুক, আমিয়াখুম থাকলেও নিরাপত্তা জনীত কারনে জেলা সদর সহ চারটি উপজেলা ছাড়া অন্য উপজেলা গুলোতে এখনো পর্যটকদের ভ্রমন অনুমতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়নি প্রশাসনের পক্ষ হতে তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সকল জটিলতা সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ হতে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পর্যটন কেন্দ্রর আশেপাশে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যগন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ, বান্দরবান জোনের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহীন মিয়া বলেন, বান্দরবানে সারা বছরই পর্যটকরা ভ্রমণে আসে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাদা পোশাকেও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে দায়িত্ব পালন করেন। শীতের এই মৌসুমে টানা ছুটিতে ঘুরতে আশা পর্যটকেরা পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে আর সুন্দর মূহুর্ত গুলো নিজেদের ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দী করে ভ্রমনের স্মৃতিকে ধরে রাখছেন, এটা যেনো এক ভিন্ন রকমের আনন্দের অভিজ্ঞতার জন্ম দিচ্ছে পর্যটকদের উৎসাহী মনে।