মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৬ অপরাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার:: জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত- এই সমীকরণ সামনে রেখে সেঞ্চুরিয়নের শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। যেখানে এবারের সফরের আগে কোনও জয় ছিল না, সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ জেতার হাতছানি- কম কথা নয়। যার শুরুটা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। হঠাৎ বল হাতে জ্বলে উঠেন দুরন্ত ফর্মে থাকা এ স্টার ক্রিকেটা। ঘূর্ণি জাদুতে কুইন্টন ডি কককে ফিরিয়ে ব্রেকধ্রু এনে দেন তারকা এ অলরাউন্ডার।
পরে বোলিং আক্রমণের হাল ধরেন তাসকিন আহমেদ। বল হাতে রীতিমতো তুলে ফেলেন বোলিং ঝড়। একাই পাঁচ উউকেট শিকার করে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং-লাইন আপে নামিয়ে দেন ধস। পরে তাসকিন-মিরাজের সঙ্গে যোগ দেন শরিফুল ইসলাম ও সাকিব হাসান। লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের ধ্বংসাত্মক বোলিংয়ে ব্যাটিং ধস সামলে উঠতে না পেরে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানের পুঁজি গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সেঞ্চুরিয়নে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে মালানের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ডি ককের পথচলা শুরুতে ছিল বেশ সাবলিল। তবে ইনিংসের প্রথম ওভারেই রিভিউ নষ্ট করে বাংলাদেশ। শরিফুল ইসলামের বলে মালানের বিপক্ষে কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয় তামিমরা। ষষ্ঠ ওভারে গিয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। মেহেদী হাসানের বলে মাহমুদউল্লাহর হাতে বন্দী হন কুইন্টন ডি কক। ৮ বলে মাত্র ১২ রান করেন প্রোটিয়া ওপেনার।
দলীয় ৬৬ রানে চমক দেখান পেসার তাসকিন আহমেদ। উইকেটে থিতু হতে চেষ্টা করা ভেরিনকে ব্যাটিংএজ করান তাসকিন। বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে নিজের স্টাম্পে বল টেনে আনেন ১৬ বলে ৯ রান করা ভেরিন। এরপর স্কোরে তিন রান যোগ হতেই আবার তাসকিন ঝলক।
দলীয় ৬৯ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাসকিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার জানেমান মালান। ৫৬ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল সাতটি চারের মার। এরপর স্বরুপে সাকিব আল হাসান। এলবির ফাদে ফেলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে। যদিও রিভিউ চেয়ে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। ১১ বলে মাত্র দুই রান করেন বাভুমা।
মিলারের সঙ্গে বড় জুটি গড়তে পারেন ভ্যান ডার ডসন। এমন আশায় ছিল স্বাগতিকরা। তবে তাতে বাধ সাধেন পেসার শরিফুল ইসলাম। বিদায় করেন ডসনকে। ১০ বলে মাত্র ৪ রান করে ডসন ক্যাচ দেন মিরাজের হাতে। ৮৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কাঁপছে যেন দক্ষিণ আফ্রিকা।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে হাল ধরার চেষ্টা করেন ডেভিড মিলার ও প্রিটোরিয়াস। এই জুটি দলকে নিয়ে যান শতরানের উপর। এরপরই আবার তাসকিনের আঘাত। ফিরিয়ে দেন প্রিটোরিয়াসকে। স্লাশ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকের কাছে ক্যাচ দেন তিনি। ২৯ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ২০ রান করেন প্রিটোরিয়াস।
২৯ তম ওভারে তাসকিনের জোড়া আঘাত। তৃতীয় বলে তিনি ফেরান নির্ভরযোগ্য ব্যাটার ডেভিড মিলারকে। ৩১ বলে দুই চারে ১৬ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। একই ওভারের শেষ বলে তাসকিন আউট করেন পেসার ক্যাগিসো রাবাদাকে। ৩ বলে ৪ রান করা রাবাদাও ক্যাচ দেন মুশফিকের হাতে। আর তাতেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো এক ইনিংসে পাচ উইকেট শিকার করেন তাসকিন। ১২৬ রানে দক্ষিণ আফ্রিকার তখন নেই ৮ উইকেট।
বাকি দুই উইকেটে অবশ্য ২৮ রান যোগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৪ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি এনগিডি। হয়ে যান সাকিবের বলে আউট। কেশব মাহারাজের রান আউটে শেষ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ৩৯ বলে ২৮ রান করেন তিনি।
বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে ৯ ওভারে মাত্র ৩৫ রানে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। সাকিব দুটি, মিরাজ ও শরিফুল একটি করে উইকেট লাভ করেন। সাত ওভারে ২৩ রানে উইকেটশূন্য থাকেন মোস্তাফিজ।