সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন

জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে চাপ বাড়বে জীবনযাত্রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক,ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম॥ করোনা মহামারির চাপ সামলাতে না সামলাতেই রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা। দেশে দেশে দেখা দিচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি, কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।

পরিস্থিতি সামলা দিতে বাংলাদেশ সরকার ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে জ্বালানি খাতে সরকারের ভর্তুকি কমিয়ে আনা। যার জেরে শুক্রবার (০৫ আগস্ট) মধ্যরাতে রেকর্ড পরিমাণে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে।বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতি লিটার ডিজেলের দাম বেড়েছে ৩৪, অকটেন ৪৬ এবং পেট্রোল ৪৪ টাকা। গতরাত ১২টার পর থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হয়েছে।

দেখা গেছে, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা। পেট্রোলের দাম ৫১.১৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি লিটারের দাম হয়েছে ১৩০ টাকা। আর অকটেনের দাম বেড়েছে ৫১.৬৮ শতাংশ, প্রতি লিটার কিনতে গুনতে হবে ১৩৫ টাকা।

মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করতে এ দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির চিন্তা করে নাই। অবস্থার প্রেক্ষিতে অনেকটা নিরূপায় হয়েই কিছুটা এডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনঃবিবেচনা করা হবে।

এদিকে জ্বালানি তেলের মৃল্য বৃদ্ধির খবরে শুক্রবার রাত থেকেই রাজধানীর সড়কে গণপরিবহন শূন্য হতে থাকে। হঠাৎ বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েন নগরবাসী।

পরিবহন শ্রমিকরা জ্বালানির দাম বাড়ানোর এই হারকে অস্বাভাবিক বলছেন। কারণ এর প্রভাব দ্রব্যমূল্যের ওপরও পড়বে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নাভিশ্বাস অবস্থা সাধারণ জনগণের। তার মধ্যে জ্বালানি তেলের এমন অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ব্যয় বাড়বে সবকিছুতে।

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহনের ভাড়া দ্রুত সমন্বয়ের দাবি জানিয়েছেন মালিকরা। তা না হলে যাত্রীদের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে বলে তারা জানান। পরিবহন নেতারা বলছেন, তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহনের ভাড়া সমন্বয় না হলে সড়কে তার প্রভাব পড়বে।

বাস মালিকরা বলছেন, তেলের দাম যে হারে বেড়েছে, সে হারে ভাড়া না বাড়ালে রাস্তায় গাড়ি নামানো সম্ভব নয়। লস দিয়ে কেউ সড়কে গাড়ি নামাবে না। ভাড়া সমন্বয় না হওয়া পর্যন্ত যদি বাসে যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করা হয়, তাহলে সমস্যা হবে। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সরকারকে দ্রুততম সময়ে ভাড়ার বিষয়টি সুরাহা করার দাবি জানান তারা।

চলমান করোনা মহামারির মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রে যুদ্ধের জেরে বাংলাদেশের বহু মানুষ অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ তাদের ব্যয় বহন করতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে। ঠিক এমনই এক ক্ষণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com