বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন

চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন কিম-পুতিন

সংগৃহীত ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, একুশের কণ্ঠ:: উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ মোট ২৬ জন রাষ্ট্রপ্রধান আগামী সপ্তাহে বেইজিংয়ে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর বিবিসির।

‘বিজয় দিবস’ নামে পরিচিত এ কুচকাওয়াজ জাপানের বিরুদ্ধে চীনের যুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকী এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।

চীন এ কুচকাওয়াজে শত শত যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেমসহ তাদের সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন করবে। এটি হতে যাচ্ছে চীনের সেনাবাহিনীর নতুন সামরিক সরঞ্জামের প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী। খুবই সুপরিকল্পিত এ কুচকাওয়াজে তিয়েনআনমেন স্কয়ারে প্যারেড করবেন চীনের কয়েক হাজার সেনা। যার মধ্যে চীনের সামরিক বাহিনীর ৪৫টি তথাকথিত ‘সেনাদলের সারি’ এবং যুদ্ধে অংশ নেওয়া প্রবীণ সৈনিকরা থাকবেন। ৭০ মিনিটের এ কুচকাওয়াজ পর্যবেক্ষণ করবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ধারণা করা হচ্ছে, সামরিক বিশ্লেষক ও পশ্চিমা শক্তিগুলো এ অনুষ্ঠান নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ দিনের ‘ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বের’ প্রশংসা করে জানায়, দুই দেশ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।

২০১৫ সালের শেষ বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়া শীর্ষ নেতাকে না পাঠিয়ে কেবল উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা চো রিয়ং-হে-কে পাঠিয়েছিল। এবার কিম জং উনের উপস্থিতিকে সম্পর্কের একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। বেইজিংয়ে পুতিন ও শি জিনপিংয়ের পাশে কিমের উপস্থিতি হবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টিকে শি জিনপিংয়ের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক অর্জন হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য পুতিনের সঙ্গে একটি চুক্তি করার চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি গত সপ্তাহে তিনি কিমের সঙ্গেও বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

চীনের প্রেসিডেন্ট এখানে ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে, ভূ-রাজনৈতিক এই খেলার তাস তার হাতে রয়েছে। কিম ও পুতিন- দুজনের ওপরই সীমিত হলেও তার প্রভাব রয়েছে।

সময়ের দিক থেকেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। হোয়াইট হাউজ ইঙ্গিত দিয়েছে, অক্টোবরের শেষ দিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এশিয়া সফরে আসতে পারেন এবং তিনি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে কিম ও পুতিনের কাছ থেকে সরাসরি সব তথ্য জেনে নেবেন শি জিনপিং। ফলে আলোচনার কেন্দ্র থেকে তিনি বাদ পড়ছেন, এমন আশঙ্কা তার থাকবে না।

কিম সর্বশেষ বেইজিং সফর করেছিলেন ২০১৯ সালে, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে। এর আগে তিনি ২০১৮ সালে টানা তিনবার চীন সফর করেছিলেন। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কিম খুব কমই বিদেশ ভ্রমণ করেন।

চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে পশ্চিমা বিশ্বের বেশিরভাগ নেতার যোগ দেওয়ার আশা করা হচ্ছে না, কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ান নেতা পুতিনের সঙ্গে তাদের মতপার্থক্য রয়েছে।

জাপান ইতিমধ্যে বিশ্ব নেতাদেরকে এই অনুষ্ঠানে অংশ না নিতে আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির অভিযোগ, এই কুচকাওয়াজে ‘জাপান-বিরোধী মনোভাব’ রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com