শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:০১ পূর্বাহ্ন
ফরিদপুর প্রতিনিধি:: ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে নিজবাড়ির শোবার ঘর থেকে এক ব্যবসায়ীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ওই ব্যাক্তির নাম শেখ আতাউর রহমান (৬৩)। তিনি উপজেলার গাজীটেক ইউনিয়নের তেলিডাঙ্গী গ্রামের মৃত শেখ হোসেনের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে আতাউর সকলের বড়। তার ছোট ভাই মোশাররফ হোসেন উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। চেযারম্যান থাকাকালীন সময়ে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর মারা যান মোশাররফ।
শেখ আতাউর রহমান বিবাহিত এবং এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। আতাউর ঢাকায় থাই এ্যলুমিনিয়ামের ব্যবসা করতেন। মোশাররফের মৃত্যুর পর তিনি স্ত্রী মোসাম্মৎ শিপন (৪৯), ছেলে শিহাব মহমুদ (১৯) ও মেয়ে জান্নাতুল তাসমি (১৩)কে নিয়ে এলাকায় চলে আসেন এবং তেলীডাঙ্গীতে পৈত্রিক বাড়িতে দোতলা বাড়ীতে বসবাস করতে থাকেন। বাড়ীর সামনে ফরিদপুর-চরভদ্রাসন সড়কের পাশে দোকান ঘর তুলে থাই অ্যালেমোনিয়ামের ব্যবসা করতেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারী আতাউরের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নের জোয়াইড় গ্রামে বাবার বাড়ী যান। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আতাউর বাড়ীতে একাই ছিলেন।
তেলীডাঙ্গী গ্রামের চায়ের দোকানদার সাচ্ছিদা তেলী (৩৬) জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে আতাউর তার দোকানে চাপা খেতে আসেন। চাপা খেয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়িতে চলে যান।
আতাউরের চাচাতো ভাই শেখ মোয়াজ্জেম (৪৫) বলেন, সকাল আটটার দিকে তিনি জমিতে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে আতাউরের বাড়ির উঠন দিয়ে যেতে হয়। তিনি দেখাতে পান হাস মুরগীর ঘর খোলা হয়নি এবং বাড়ির আঙ্গিনায় বিদ্যুতের আলোজ্বল ছিল। এ দেখে তার সন্দেহ হয়। পরে তিনি আতাউরের শয়ন কক্ষের দরজা খোলা। তিনি ঘরের মধ্যে উকি দিয়ে মাথার বাম পাশে চোখের উপর ভাড়ি কিছু দিয়ে আঘাতসহ মৃত অবস্থায় দেখতে পান। তিনি চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন।
খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে ছেলে মেয়েসহ আতাউরের স্ত্রী বাড়িতে আসেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমি নিয়ে আতাউরের বাগিনাদের সাথে বিরোধ ছিল। এ বিরোধের কারনে এ হত্যর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, গতকাল দুপুরে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছ্। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
সুমন রঞ্জন সরকার আরও বলেন, মৃতের মুখে বাম কপাল বরাবর ভাড়ি কোন বস্তুর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে ঘুমন্ত অবস্থায় বালিশ চাপা দিয়ে আতাউরকে হত্যা করা হয়। পরে ভাড়ি কোন বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়।