রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়ে লীগ শিরোপার আরও কাছে বসুন্ধরা কিংস

স্পোর্টস রিপোর্টার, ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ ৭ জুলাই বৃহস্পতিবার সংগ্রহ করে নিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের ফেভারিট দল বসুন্ধরা কিংস। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হারায় চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডকে।

১৯ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে অস্কার ব্রুসনের দল। এক ম্যাচ কম খেলা আবাহনী ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। নিজেদের ১৯তম ম্যাচে এটা ‘দ্য কিংস’ খ্যাত বসুন্ধরার পঞ্চদশ জয়। ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই আছে তারা।

পরের তিন ম্যাচ থেকে মাত্র তিন পয়েন্ট অর্জন করলেই চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উল্লাসে মাততে পারবে তারা। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা বন্দরনগরীর দল ও ‘ব্লু পাইরেটস’ খ্যাত চট্টগ্রাম আবাহনীর সপ্তম হার। ২৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে সাতে। লীগের প্রথম পর্বে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হোম ভেন্যুতে ৫-০ গোলে হারিয়েছিল কিংস। তবে এ্যাওয়ে ম্যাচে জিততে অনেক ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাদের।

তিন ডিফেন্ডারের ফাঁক দিয়ে রক্ষণচেরা পাস বাড়ালেন মিগেল ফিগেইরা দামাশেনো। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বল নিয়ন্ত্রণে নিলেন নুহা মারোং। চট্টগ্রাম আবাহনীর পোস্টের নিচে বিশ্বস্ত দেয়াল হয়ে থাকা সাইফুল ইসলাম পারলেন না এই দফায় আটকাতে। ওই গোলই শেষ পর্যন্ত গড়ে দিল ম্যাচের ভাগ্য। স্বস্তির জয়ে শিরোপা পথে আরেকটু এগিয়ে গেল বসুন্ধরা কিংস। হ্যাটট্রিক লীগ-শিরোপা জিততে আর দরকার মাত্র ৬ পয়েন্ট। তার অর্ধেক পয়েন্টই

প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে রবসন রবিনহো তীব্র শট নিলেও পোস্টে রাখতে পারেননি। প্রথমার্ধে কোন দলই আর গোল করতে পারেনি। প্রথম লেগে চট্টগ্রামের দলটিকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া কিংস ফিরতি লেগের প্রথমার্ধেও আক্রমণে আধিপত্য করে। অন্যদিকে, নিজেদের ঘর সামলে মাঝে মধ্যে প্রতিপক্ষের রক্ষণে হানা দেওয়ার চেষ্টায় থাকে চট্টগ্রাম আবাহনী।

রবিনিয়ো-মিগেল-নুহা মারোংয়ে সাজানো কিংসের আক্রমণভাগের সামনে বাধা হয়ে ছিলেন চট্টগ্রাম আবাহনী গোলরক্ষক সাইফুল। পঞ্চদশ মিনিটে রবিনিয়োর সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে বক্সের ঠিক উপর থেকে বাঁ পায়ে শট নিয়েছিলেন মিগেল, এক হাতে আটকান গোলরক্ষক।

একটু পর দুর্ভাগ্য পথ আগলে দাঁড়ায় কিংসের। বাঁ দিক দিয়ে দ্রুত ওঠা ইয়াসিন আরাফাত আলতো টোকায় বল এগিয়ে নিয়ে জোরাল শট নেন, কিন্তু সাইফুলকে ফাঁকি দিলেও বল ক্রসবারে প্রতিহত হয়।

২৪ মিনিটে নিজেদের প্রথম ভালো সুযোগটি তৈরি করে টানা তিন ম্যাচ হেরে আসা চট্টগ্রাম আবাহনী। ওমিদ পোপালজাইয়ের ক্রসে পিটার থ্যাঙ্কগডের হেড অল্পের জন্য যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।

চার মিনিট পর আরেকটি ভালো সুযোগ নষ্টের হতাশায় পুড়তে হয় কিংসকে।

৩৩ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় বন্দরনগরীর দলটি। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা থ্যাঙ্কগড (১৮টি)। তার বদলি নামেন আরাফাত হোসেন।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে রবিনিয়োর শট অল্পের জন্য বদলে পোস্টের বাইরে যায়। এরপর চট্টগ্রাম আবাহনীর ক্যান্ডি অগাস্টিনের দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া শট পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি আনিসুর রহমান জিকোকে।

৫১তম মিনিটে মিগেলের রক্ষণ চেরা পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া মারোং গোলরক্ষক সাইফুলকে একা পেয়ে যান। তাকে ছিটকে দিয়ে অনায়াসে লক্ষ্যভেদ করেন মারোং। গত এপ্রিলের পর লিগে গোল পেলেন গাম্বিয়ার এই ফরোয়ার্ড।

একটু পরই অগাস্টিনের জোরাল শট মাশুক মিয়া জনির মাথায় লাগে। মাঠেই কিছুক্ষণ চিকিৎসা নিয়ে কিংসের এই মিডফিল্ডার খেলায় ফিরলে স্বস্তি ফিরে সমর্থকদের মুখে।

৬৮তম মিনিটে দামাশেনোর লবে রবিনিয়োর ভলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পর দুই দলের খেলার গতি কিছুটা কমে। শেষ দিকে আবারও জমে ওঠে। ৮৬তম মিনিটে কিংসের মাহাদি খানের কোনাকুণি শট দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরু হলে ৫২ মিনিটে অবশেষে গোলের সন্ধান পায় কিংস। প্রায় মাঝমাঠ থেকে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে বল পাস দেন কিংসের মিগুয়েল। বল পেয়ে দ্রুতগতিতে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের কৌনিক শটে দলকে এগিয়ে দেন নূহা মারাং (১-০)। ৫৪ মিনিটে অমিত পপালজের স্পটকিকে ডান প্রান্তে বল পেয়ে মনির আলম যে শট করেন তা ফিস্ট করেন জিকো। পরের মিনিটেই কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ফিস্ট করেন জিকো।

কিন্তু বল যায়নি জালে। ৮৭ মিনিটে মতিন মিয়া বল নিয়ে দিয়েছিলেন সতীর্থকে। বল বুঝে নিয়ে মাহাদী ডান পায়ের শট নিলে তা চলে যায় জালের বাইরে। ৮৯ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে মিডফিল্ডার জাহিদ হোসেনের কর্নার দারুণ দক্ষতায় বিপদমুক্ত করেন জিকো। শেষ পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করেও আর গোল করতে পারেনি আর হারও এড়াতে পারেনি চট্টগ্রাম আবাহনী।

১৯ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে আছে মারুফুল হকের চট্টগ্রাম আবাহনী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com