সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:২৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:: বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে ফের উত্তাল শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকা। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের আন্দোলন, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের কারণে ৭ টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে কোনাবাড়ী জরুন এলাকার ইসলাম গার্মেন্ট ইউনিট-২, রিপন নিটওয়্যার, সিনটেক্স লিমিটেড, কাশিপুর নয়াপাড়া এলাকার মনটেক্স ফ্যাব্রিকস, কাইজার নীটওয়্যারস, কটন ক্লাব বিডি ও মণ্ডল ফ্যাব্রিকস।
বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকেল থেকে এসব কারখানার ফটকে বন্ধের নোটিশ টাঙানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও অঘোষিত ছুটি চলছে বেশ কিছু কারখানা। এর ফলে মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় শ্রমিক আন্দোলন কিছুটা শিথিল রয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকাল থেকে মহানগরীর চান্দনা, নাওজোড় ও ভোগড়া এলাকায় একাধিক কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আন্দোলনে নেমে পড়ে। এ সময় শ্রমিকরা মহাসড়কের উপর টায়ার, কাঠ ও বাঁশে আগুন অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন কারখানার মূল ফটকে ঢিল ছুড়ে ভাঙচুর করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ গিয়ে বাধা দিলে শ্রমিকদের সাথে ধাওয়া পাল্টা সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে অন্যদিনের মতো বড় কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
নগরীর বিভিন্ন এলাকার কারখানা ঘুরে দেখা যায়, জানমালের নিরাপত্তায় কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ টাঙিয়ে রেখেছেন। নোটিশে বলা হয়েছে কারখানার শ্রমিকরা বেআইনিভাবে কাজ বন্ধ রেখে সকাল বেলা হাজিরা দিয়ে বের হয়ে চলে যাচ্ছে, এ ছাড়াও শ্রমিকগণ ভাঙচুর ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ অরাজকতা সৃষ্টি করছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিজিএমইএ এবং কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদেরকে বার বার কাজে যোগদানের অনুরোধ করা সত্ত্বেও শ্রমিকরা কাজে যোগদান করা থেকে বিরত থাকছে। শ্রমিক-কর্মচারীদের এহেন কার্যকলাপ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ মোতাবেক অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। এমতাবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে আজ বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১০(১) মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলো।
গাজীপুর ২ শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহম্মেদ জানান, সকালে চান্দনা এলাকায় একটি কারখানায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে নাওজোড়সহ আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা ভাঙচুর করেন। আগুন ধরিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঐ এলাকায় পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।