মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
ঘূর্ণিঝড় মন্থা নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: দক্ষিণপূর্ব ও দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এর নামকরণ করা হয়েছে ‘মন্থা’। বর্তমানে এটি দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের জারি করা ৫ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ বর্তমানে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে। রাত ৩টার তথ্য অনুযায়ী, এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১,৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার বন্দর থেকে ১,৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা বন্দর থেকে ১,২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা বন্দর থেকে ১,২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও আরও ঘণীভূত হতে পারে। এটি আগামীকাল ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা বা রাত নাগাদ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি সাগর এখন খুবই উত্তাল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গভীর সাগরে না যেতে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উল্লেখ্য, ‘মন্থা’ নামটি দিয়েছে থাইল্যান্ড। থাই ভাষায় ‘মন্থা’ শব্দের অর্থ ‘সুবাসিত ফুল’ বা ‘সুন্দর ফুল’।
২০০৪ সাল থেকে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের প্রথা চালু করে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে গঠিত WMO/ESCAP প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা তৈরি ও অনুমোদন করে।
এই প্যানেলের সদস্য দেশগুলো হলো-বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, ইয়েমেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মন্থা’ নামটি শান্ত ও কোমল অর্থ বহন করলেও প্রকৃতিতে এটি হতে পারে প্রবল ও বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়।