মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

ক্ষমতার মৃত্যুঞ্জয় এবং আমৃত্যু ক্ষমতা

মিনা ফারাহ:
এবার ব্রিটিশ প্রশাসনের গোপন নথিপত্রেও ঘাঁটাঘাঁটি শুরু হলো। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র ওপরও খবরদারি করছে ঢাকা! ব্রিটিশ সরকারের নামে ভুয়া খবর তৈরি করার অভিযোগ উঠছে। ফলে ক্ষমতাসীনদের ওপর পরোক্ষভাবে হলেও ক্ষুব্ধ ব্রিটিশ প্রশাসন এর একটি জবাব চেয়েছে। ক্ষমতার স্বার্থে আর কত নিচে নামবে আওয়ামী লীগ! গুজব প্রচারকারী হাফমন্ত্রীর ইতোমধ্যে পদত্যাগ করা উচিত ছিল। সবাই জানে, নির্বাচন চলে গেছে কার্যত দুর্বৃত্তদের হাতে। চলে গেছে ফেইক নিউজ কারিগরদের হাতে। এখানে ভোটাভুটির সম্ভাবনা কোথায় বাকি রইল? হাছান মাহমুদ এবার ভুয়া চিঠির জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দুষলেন না। এর মানে কি এটা নয় যে, তিনিও স্বীকার করলেন, এসব অপকর্মের মূলে এই দুষ্কৃতকারীরা। আজীবন ক্ষমতার বিনিময়ে মাল্টিপার্টি ডেমোক্র্যাসি বিক্রির প্রতিবাদে এ লেখাটি।

‘যত দিন হাসিনা জীবিত থাকবেন, তত দিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে’- দাবি হানিফের। আজীবন ক্ষমতার গ্যারান্টির সাথে একমাত্র প্রতিপক্ষকে বিদায় করে দেয়ার মোটিভের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। এই মহাবিপদ সঙ্কেতের পর রাস্তার আন্দোলনের প্রয়োজন আরো বেশি জোরদার হলো। কারণ নিছক ব্যক্তি খালেদা নন, সংসদে বৈধ বিরোধী দলের অস্তিত্বের প্রশ্নটিই এখানে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ক্রাইসিস যখন এই পর্যায়ে পৌঁছে গেছে আদর্শের মতপার্থক্যকে বিদায় করে, সবাই এক মঞ্চে না এলে বিপর্যয় নিশ্চিত।

হঠাৎ আজীবন ক্ষমতায় থাকার ঘোষণা, স্রেফ কথার কথা নয়। ৫ জানুয়ারি না হয় হয়ে গেল; তবে আগামী নির্বাচনগুলোকেও হাতছাড়া হতে দেয়ার দুর্ভাগ্য যেকোনো মূল্যে রুখতেই হবে। এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়াই একমাত্র ব্যক্তি যিনি জেলের বাইরে কিংবা ভেতরে, গণতন্ত্রহরণকারীদের ঘুম হারাম করে দিয়েছেন। তার বিকল্প এখনো তৈরি না হওয়ায় তার ওপরই নির্ভরশীলতাকে অস্বীকারের উপায় নেই। নৈতিক অর্থে, প্রতীকী অর্থে, জাতীয় নির্বাচনে মুক্ত খালেদার অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন যাতে সম্ভব না হয়। অন্যথায় রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের হাতে সহজ ‘বিজয়’ তুলে দেয়া হবে।

তোপের মধ্যেই অক্টোবরে নির্বাচনী তফসিল জারির ঘোষণায় নির্বাচন দখলের নীলনকশাই যেন আরো বেশি নিশ্চিত হলো। আশঙ্কা জাগে, এটা একদলীয় নির্বাচনের পূর্বাভাস। এরপর চিকিৎসা এড়িয়ে খালেদাকে শেষ মুহূর্তে হয়তো বিদেশে পাঠিয়েই দেয়া হবে। এরপর এরশাদকে নিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচন করে আরো পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা হবে। এর মধ্যেই সংবিধান সংশোধন হয়ে যেতে পারে। সুতরাং কেউ যদি মুহূর্তের জন্যও ভাবেন, হানিফ কথার কথা বলেছেন, এটাও ভাবতে হবে, তারাই কিন্তু ৫ জানুয়ারি ঘটিয়ে বৈধতা আদায় করে ছাড়লেন। সুতরাং খালেদার সরকারকে কে কতটুকু ঘৃণা করে, এসব প্রশ্ন আর নয়। বরং দেশের কল্যাণে, নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীদের সক্রিয় করে, রাজপথে দ্রুত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আসার পথের সব অনিশ্চয়তা অতিক্রম করতে হবে।

মিডিয়ার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে- ডায়াবেটিস, গ্লুকোমা, পারকিনসনসহ নানা প্রকার জটিল রোগে খালেদা আক্রান্ত। এ কারণে তার হাত শক্ত হয়ে যাচ্ছে। অন্ধত্বেরও প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি, মৃত্যুর আশঙ্কাও মহাসচিবের বক্তব্যে। ডাক্তারেরাই ভালো বুঝবেন। তবে পুরো পরিস্থিতিই তার স্বাস্থ্যের চরম অবনতির ইঙ্গিতবাহী। এ অবস্থায় উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়ার বদলে, সত্য অস্বীকার করার মধ্যে অশুভ ইঙ্গিত। এখন পর্যন্ত হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংগঠনগুলো নীরব! জাতিসঙ্ঘ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানবাধিকার বিভাগেও নীরবতা। মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানে, প্রত্যেক মানুষেরই সুচিকিৎসার অধিকার রয়েছে। এর মানে, তারা কি আজীবন ক্ষমতা বনাম মাইনাস ওয়ান ফর্মুলার পক্ষে? জনগণের মনে হতে পারে তাই।

বেশ জোর দিয়েই হানিফ বলেছেন, ‘আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন নেত্রী। ২০২৯-এর পর অন্যেরা ভাবতে পারে।’ এবারে ব্যাখ্যা করা যাক। আজীবন শব্দের অর্থ আমৃত্যু। ২০২৯ সালে শেখ হাসিনার বয়স হবে ৮২। ডিজিটাল পৃথিবীতে ৮২ খুব বেশি বয়স নয়। অস্ত্রের মুখে বাধ্য না হলে ৯২ বছর বয়স্ক জিম্বাবুয়ের মুগাবে কখনোই ক্ষমতা ছাড়তেন না। তাহলে ২০২৯-এর পর হবেটা কী? যদি ৯২ বছর বয়সী মাহাথিরের মতো গ্যাপ না দিতে চান, তাহলে ২০৪১ পেরিয়ে একটানা ক্ষমতার রেকর্ড। চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিপ্লবে সব দেশের মানুষের আয়ু বাড়ছে। বাংলাদেশেও বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। পশ্চিমে উন্নত চিকিৎসার কারণে বুড়া-বুড়িরা মরতে আজ চান না। অথচ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আহত সৈন্যদের অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া যেত না। কারণ পেনিসিলিন আবিষ্কার হয়েছে পরে, ২৮ অক্টোবর ১৯২৮ সালে। চিকিৎসাশাস্ত্রের কারণে হয়তো এমন এক টিকা আবিষ্কার হবে, যে জন্য আয়ু বেড়ে ২০০ বছর অতিক্রম করতে পারে ভবিষ্যতে। হানিফের হিসাব ঠিক হলে, ২০২৯ সালের পর এরশাদ বা হাইকমান্ডের পরিবারের কেউ ক্ষমতায় আসবেন। তত দিনে এরশাদের বয়স হবে প্রায় এক শ’। এরশাদের জন্য অসম্ভব বলে কোনো শব্দ ডিকশনারিতে নেই। কারণ, ১৫তম সংশোধনীতে তার শাসনামল বিলুপ্ত; প্রেসিডেন্ট হিসেবেও বিলুপ্ত। এর পরও বিশেষ উপদেষ্টা এবং একসাথে সরকারে এবং বিরোধী দলেও! তবে তারও আরেকবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন আছে। হয়তো তখনো বেঁচে থাকবেন ক্ষমতার এই মৃত্যুঞ্জয়ীরা।

সম্ভবত আজীবন ক্ষমতা বনাম মাল্টিপার্টি ডেমোক্র্যাসির শেষ যুদ্ধ এটা। ২০১৮-এর নির্বাচনে খালেদা না থাকলে ভূঁইফোঁড় ‘বিএনপি’র অভ্যুত্থান সম্ভবত ঠেকানো যাবে না। ফলে এদের নিয়েই একাদশ সংসদ নির্বাচন করা হবে। এই আওয়াজ এখন মুখে মুখে। এমনকি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও বলেছেন লন্ডনের কথা ভুলে যেতে। বললেন, খালেদার জেলে থাকারও পক্ষে। অবশ্য কথাগুলো খুব ভালো লাগছে না। জানি না, কোথায় কারা কিসে ব্যস্ত। খালেদাকে ছাড়া নির্বাচন হতে দিলে বিরোধী দলের কালচার এদেশ থেকে বিলুপ্ত হবে। অপশক্তি অবশেষে বিজয়ী হবে।
কে না জানে, এরশাদের পতনের মাধ্যমে গণতন্ত্র উদ্ধারের পর খুঁড়িয়ে হলেও চলছিল সংসদ। ওয়াকআউট, ওয়াকইন, বয়কট ইত্যাদির মধ্য দিয়ে প্রাণ পাচ্ছিল সংসদীয় গণতন্ত্র। কিন্তু জুলাই ২০১১ সালে কে বা কারা হঠাৎ সব হিসাব বদলে দিলো। এর পর থেকে যা কিছু ঘটছে সবই বাস্তবে একদলীয় নির্বাচনের পক্ষে। যেকোনো ঘটনা ঘটানোর আগে এভাবেই আওয়াজ ওঠে। এরপর যা হওয়ার সেটাই হয়। এভাবে হয়ে আসছে। আজীবন ক্ষমতায় থাকার প্রশ্নে সঙ্কেত বুঝতে হবে।


মাত্র কয়েক দিন আগে চীনের সংবিধান সংশোধন করে শি জিনপিংকে আমৃত্যু প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হলো। বহু আগেই ‘প্রতিবাদ’ শব্দটিকে উধাও করে দিয়েছে কমিউনিস্ট রেজিম। ফলে এক ব্যক্তিকে আজীবন প্রেসিডেন্ট মানতে বাধ্য চীনারা। এটা অন্য দেশের ক্ষমতাসীনদের প্রভাবিত করা অসম্ভব নয়। ভারতের পাশাপাশি একাধিক জায়গায় আওয়ামী লীগকে প্রভাবিত করছে চীনা রেজিমও।

এ ধরনের ঘটনা আরো একবার বাংলাদেশেই ঘটেছিল। বাকশালের সংবিধানে এমন সব আদর্শ ছিল, যা ’৭১-এর চেতনার সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। ক্ষুব্ধ মানুষ আসলে গ্রহণ করেনি। এমনকি খোদ আওয়ামী লীগের একাধিক হেভিওয়েট নেতাও এর বিরুদ্ধে ছিলেন। একদলীয় ব্যবস্থা সরকারের ভেতরে ও বাইরে প্রতিবিপ্লবীদের ঝড়। এদেরই অন্যতম কর্নেল তাহের। ইতিহাস মনে রাখলে অনেক বিপদ এড়ানো সম্ভব। সবাই জানেন, কারা ’৭৫-এর পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ খুনি। অনেকেই অবশ্য যার যার যুক্তি মিডিয়াকে বলেছেন। এসব পাওয়া যাবে নেটে। ইতিহাসের কিছুটা ধারাবাহিকতা মনে করিয়ে দেয়াই লক্ষ্য।

বিবিসি বাংলাকে হানিফ- উন্নতির জন্য আওয়ামী লীগকে আজীবন ক্ষমতায় রাখতে হবে। ‘আজীবন বলতে, আমৃত্যু।’ উন্নতিই যদি কাউকে ক্ষমতায় রাখার একমাত্র যোগ্যতা হয়, তাহলে এ কথাও সত্য, আজকের পৃথিবীতে ‘মেড ইন চায়না’ ছাড়া কোনো জিনিস পাওয়া কঠিন। দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ায় মার্কিন অর্থনীতির জন্যও তারা চ্যালেঞ্জ। তবে পশ্চিমে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের শীর্ষে কিন্তু চীনারাই। এত উন্নত দেশ; তবুও দেশবাসী কেন থাকতে চায় না স্বদেশে? এরাই কেন সাদা এবং কালো টাকা দিয়ে ভরে ফেলছে পশ্চিমের স্টকমার্কেট এবং রিয়েল এস্টেট? কারণ, চীনের উন্নতির কাছে মানবাধিকার ধরাশায়ী। কমিউনিস্ট রেজিমের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলা নিষেধ। সমালোচনা করলেই নিখোঁজ। এ দিকে, উন্নত এবং ডিজিটাল চীনে মোটেও আস্থা নেই চীনাদের। আমাদের মতো তারাও চায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার। তাই নৃশংস রেজিমের হাত থেকে বাঁচতে ব্যাপক হারে পশ্চিমে পালিয়ে যাচ্ছে বলেই রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ১ নম্বরে চীন।

একজন আজীবন ক্ষমতায় থাকলে ভোট দেবেন কাকে? আজীবন ক্ষমতাসীনকে ভোট দেয়ার বিধান আছে কি? চীনা শাসনতন্ত্রে অবশ্য ভোটের অধিকার নেই। বাকশালও সংবিধান সংশোধন করেই প্রেসিডেন্ট ফর লাইফের বিধান আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। আজীবন ক্ষমতার প্রশ্ন যখন সামনে আনা হলো, দেখতে হবে, আওয়ামী লীগ এবার কী করে। এই পর্যায়ে অনেকের শঙ্কা, হয়তো সংবিধান বদলে দিয়ে আজীবন ক্ষমতায় থাকার পথ করা হবে।


সুবীর ভৌমিকের পর অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বিরাট ট্যাংক, মনোজ যোশী যা বললেন, ভারতের প্রসঙ্গ হলে ভারতীয়রা পিটিয়ে মেরুদণ্ড গুঁড়া করে দিত। যোশীর লেখায় খালেদাকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করে আরো লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগকেই ক্ষমতায় দেখতে অধিক আশ্বস্তবোধ করে ভারত (নয়া দিগন্ত, ১৮ এপ্রিল)। মা-পুত্রকে সন্ত্রাসের অভয়াশ্রম বলেও উল্লেখ! জবাবে বলতেই হয়, সামান্য পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিদিনই বোমা অথবা গুলিতে মানুষ মারা যাওয়ার খবর ভারতীয় মিডিয়ায়। এবার তাদের জাতীয় নির্বাচনে যে ধরনের সন্ত্রাস হবে, ইতোমধ্যে কিছুটা আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। কারণ এবার শুধু কংগ্রেসই নয়, বিরাট ফ্যাক্টর নতুন ফেডারেল ফ্রন্ট। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করে মোদিকে হারাতে মাঠে নেমেছে। তাদের নেতৃত্বে আছেন মমতা ব্যানার্জি। দুই ব্লকের যুদ্ধে রাজনীতির মাঠে সন্ত্রাস শুরু হয়ে গেছে। মোদিও মারণযুদ্ধ করেই ক্ষমতায় থাকতে চাইবেন বলে মনে হচ্ছে। সুতরাং আগামী নির্বাচন যে শান্তিপূর্ণ হবে না, সেই আওয়াজও ভারতীয় মিডিয়ায়। ক্ষমতা সহজে ছাড়বে না বিজেপি। কিন্তু ভারতে চলমান সন্ত্রাস নিয়ে ভারতীয় থিংকট্যাংকের যন্ত্রণা কোথায়? মনে হচ্ছে, মনোজরা প্রচণ্ড ডিল্যুশনাল না হলে আমাদের নির্বাচন নিয়ে এত ‘গবেষণা’র প্রয়োজন মনে করতেন না। নিশ্চয়ই তাদের উদ্দেশ্য, দিল্লির স্বার্থে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের ‘আজীবন ক্ষমতায়’ রেখে যা খুশি তা-ই করা। করা হচ্ছেও তা-ই।

২৬ এপ্রিল খবরটি প্রায় প্রতিটি পত্রিকায়। বিবিসি বাংলাকে হানিফ, ‘বর্তমান বাংলাদেশে হাসিনার সমপর্যায়ে বা ধারেকাছে অন্য কোনো দলের বা কোনো পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেই… বিকল্প কেউই নেই… যত দিন কর্মক্ষম থাকবেন, তত দিন দেশ পরিচালনা করবেন…’
প্রসঙ্গ বিকল্প থাকা-না-থাকা। আজ অবধি বারবারই প্রমাণিত হয়েছে, বিকল্প না থাকার একটি উদাহরণও রাজনীতির ইতিহাসে নেই।

এখানে একটি দৃষ্টান্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতপক্ষে ’৪৭-এর পর থেকেই দুই বাংলাকে পুনরায় এক করতে বদ্ধপরিকর পড়শিরা। এ কারণে ২৪ বছর পর দ্বিতীয় দেশ বিভাগ। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেস-বিজেপি সমান। ভোটের প্রতি সম্মান না দেখানোই ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে কারণ। তবে ’৭১-এর পর, পাকিস্তান আর দুই অঞ্চলকে আবারো এক করার দাবি তোলেনি কিংবা সেই ধরনের কোনো রাজনৈতিক বক্তব্যও দেয়নি, যা কংগ্রেসের পর দিয়েই চলেছে বিজেপি। চীন আর ভারত আমাদের ভোট এবং সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বলেই প্রমাণিত তাদের ভূমিকার মাধ্যমে।

বাকশাল বনাম বহুদলীয় গণতন্ত্রের উত্তরাধিকারের যুদ্ধ এই নির্বাচন। আজীবন ক্ষমতা মানেই বাকশালের প্রত্যাবর্তন। একে রুখে দিতে চাইলে কোনোক্রমেই খালেদাকে জেলে পচতে দেয়া যাবে না। সেই লক্ষ্যে ডান-বাম-লাল-নীল- সবাইকে একমঞ্চে আসতে হবে। এর কোনো বিকল্প থাকলে এখনই জানানো উচিত। বড় যুদ্ধে জয়ী হতে চাইলে, নৈতিক বিজয় সবার আগে।

ই-মেইল: farahmina@gmail.com
ওয়েবসাইট : www.minafarah.com
সুত্র-নয়াদিগন্ত

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com