সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন

কেরানীগঞ্জে জমি নিয়ে ভাই-বোনের ৫ মামলা, জেল খেটেছেন দুজনই: হয়নি কোন সমাধান

সংবাদ সম্মেলন করে নুর নাহার

আবু জাফর, কেরানীগঞ্জ থেকে:: কেরানীগঞ্জের ব্রাহ্মনকিত্তা মৌজায় ২০০৭ সালে সাড়ে ৩ শতাংশ জমি কেনেন কুয়েত প্রবাসী শাহজালাল। ২০০৮ সাল থেকে ওই জমিতে শাহজালালের বড় বোন নুর নাহার (৬০) পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেই থেকে এখন অবধি তারা ওই জমি দখলে নিয়ে বসবাস করছেন। এক পর্যায়ে এই জমি নিয়ে ভাই-বোনের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। নুর নাহার প্রতারনার অভিযোগে ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করলে গ্রেফতার হয়ে ১১ দিন জেল খাটেন শাহজালাল। পরে শাহজালাল আবার পাল্টা প্রতারনার মামলা করেন বোন নুর নাহার, দুলাভাই নুর মোহাম্মদ (৬৫), ভাগিনা আলামিন (৩৫) ও সোহেল হোসেন জনি (২৮), ভাগনি শারমিন ও মৌসুমীর বিরুদ্ধে। এই মামলায় নুর নাহার, নুর মোহাম্মদ, আলামিন (৩৫) ও শারমিনকে গ্রেফতার করে। তারা মাসখানেক জেল খেটে জামিনে বের হন।

মাত্র এই সাড়ে ৩ শতাংশ জমি নিয়ে ভাই-বোনের মধ্যে ৫ টি মামলা হয়েছে। নুর নাহার শাহজালালের বিরুদ্ধে একটি মামলা করলেও সেটি পরে খারিজ হয়ে গেছে। পরে শাহজালাল বোন ও বোনজামাই সহ পরিবারের সবার বিরুদ্ধে ৪ টি মামলা করেন।

শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে নুর নাহার সাংবাদিকদের জানান, এই জমি কেনা বাবদ ২০০৮ সালে শাহজালালকে ৭ লাখ টাকা দিয়েছি। পরে বিদেশে থাকা অবস্থায় আমার স্বামী আরও ৪ লাখ টাকা শাহজালালকে দেয়। আপন ভাই এজন্য কোন ডকুমেন্ট নেইনি। বিদেশে থাকা অবস্থায় শাহজালাল বলেছিল দেশে ফিরে জমি লিখে (রেজিষ্ট্রি করে) দিবে। কিন্তু ও দেশে এসে নানা টালবাহানা শুরু করে। জমিতো লিখে দেয়নি, উল্টো ৪ টি মিথ্যা মামলা দিয়ে চরম হয়রানি করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ১৬ মে শাহজালালের মিথ্যা মামলায় আমাকে সহ পরিবারের ৪ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়। ১৭ মে শাহজালাল, দিপক, আহসান উল্লাহ, হৃদয় সহ কয়েকজন বাড়িতে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করে। আমরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যায়। ২৩ মে আবারও তারা হামলা চালায়। এবারও ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এরই মধ্যে ২৬ মে রাত ১১:২ মিনিটে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এসআই আনোয়ারুল ইসলাম ছেলে সোহেলের মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে। অন্যথায় হত্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। সবমিলিয়ে আতংকে মধ্যে আছি। আমরা ন্যায় বিচার চাই।

শাহজালালের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তাদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকায়। ২০০৭ সালে ওই জমি কেনার পর বোনকে থাকতে দেই। আমি ছিলাম বিদেশ। দেশে আসলে ওই জমিতে গেলে ওরা আমাকে বাঁধা দেয়া শুরু করে। এক পর্যায়ে আমি জমি বিক্রি বাবদ টাকা নিয়েছি বলে প্রচার করে। আমি ওদের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেইনি। মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, জমি আমার অথচ ওরা আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে। এজন্য আমিও ওদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছি। জেল খাটিয়েছি।

নুর নাহারের ছেলে সোহেলকে হুমকির বিষয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এসআই আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শাহজালালের দায়ের করা মামলায় আমি সোহেলের মা ও বোনকে গ্রেফতার করেছি। এজন্য হয়তো আমার প্রতি তার কোন ক্ষোভ থেকে তিনি এমনটা বলছেন। আমার সাথে সোহেলের কথা হতো। কিন্তু কোন হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটেনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com