শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:০৭ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু ৭, শনাক্ত ৭৭

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়া জেলায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লকডাউনেও থামছে না মৃত্যুর মিছিল। মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৩ নমুনা পরীক্ষা করে ৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৯০ জন ও মারা গেছেন ১৮০ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ২৩৪ জন। শুক্রবার (২৫ জুন) রাতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের অফিস এ তথ্য জানিয়েছে।

নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। নতুন করে শনাক্ত হওয়া ৭৭ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদরের ৪৭ জন, দৌলতপুরের দুইজন, কুমারখালীর ২০ জন, ভেড়ামারার একজন, মিরপুরের চারজন ও খোকসার তিনজন রয়েছেন। মৃত ৭ জনের মধ্যে চারজন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার, দুইজন দৌলতপুর উপজেলার ও একজন ভেড়ামারা উপজেলার বাসিন্দা।

এ পর্যন্ত জেলায় ৫৮ হাজার ৯৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৫৭ হাজার ৭২৬ জনের। বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৫৭৬ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১৬৪ জন এবং হোম আইসোলেশনে আছেন এক হাজার ৪১২ জন।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে কুষ্টিয়া জেলায় এক সপ্তাহের লকডাউন চলছে। রোববার (২০ জুন) রাত ১২টা থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন রোববার (২৭ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা, শপিংমল, দোকান, রেস্টুরেন্ট ও চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকবে।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। সব উপজেলায় বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। সম্প্রতি কুষ্টিয়া পৌরসভায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু পুরো জেলায় কঠোর লকডাউন চলছে। এরপরও কেন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তা নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। করোনার সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা জানান, করোনার শুরু থেকেই কুষ্টিয়া জেলায় শনাক্তের হার কখনও ২০ শতাংশের ওপরে যায়নি। কিন্তু এখন শনাক্তের হার ৪০ শতাংশের ওপরে উঠে যাচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সবাইকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।

এদিকে গত বুধবার (২৩ জুন) সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জেলায় ক্রমাগত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে জেনারেল হাসপাতালে শুধু করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হবে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, কুষ্টিয়ায় হু হু করে বাড়ছে করোনা। করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোগীদের চাপ সামাল দিতে বুধবার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com