শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৯ অপরাহ্ন

কালিয়াকৈরে কলাতে মেশানো হচ্ছে রাসায়নিক পদার্থ

কালিয়াকৈর প্রতিনিধি::

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে কলার আড়ৎগুলোতে কলা পাকাতে প্রকাশ্যেই মেশানো হচ্ছে কার্বাইড রাসানিক পদার্থ। যার ফলে কলার বাহ্যিক রং ১২ ঘন্টার মধ্যেই হলুদ ও আকর্ষনীয় আকার ধারণ করছে। যার ফলে শিশু স্বাস্থ্যসহ জনস্বাস্থ্য রয়েছে হুমকিতে । বিষাক্ত যে কেমিক্যাল মিশানো হচ্ছে তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ঝুকিপুর্ণ। কেমিক্যাল মিশ্রিত কলা খেয়ে জীবনহানির সম্ভাবনাও বেশি।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলার কালিয়াকৈর বাজার, মৌচাক, চান্দরা সফিপুর, ফুলবাড়ীয়া, বাড়ইপাড়া বাজার ও চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে প্রায় ২০-২৫টি কলার আড়ৎ রয়েছে। এসব কলার আড়ৎ এ প্রতিদিন কলা পাকানোর জন্য এবং কলার রং আকর্ষনীয় করার জন্য কার্বাইড বা কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ মিশানো হচ্ছে। বিভিন্ন হাট বাজারে যেসব কলা বিক্রি করা হচ্ছে তার শতভাগ কলাই বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে কলা পাঁকানো ও রং সুন্দর করতে ব্যবসায়ীরা এ বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলার আড়ৎদার জানায়, কলায় এসব পদার্থ মেশালে কলা দ্রুত পাকে এবং কলা দেখতে আকর্ষনীয় হয় বিধায় পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম একটু বেশী হলেও কলা কিনে নিয়ে যায়। এতে আমাদেরও লাভ বেশী হয়। এসব পদার্থ মেশানো কলা খেলে যে মানুষের ক্ষতি হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানায়,সবাই মেশায় তাই আমিও মেশাই। কেমিক্যাল মেশানোর পক্রিয়া বিষয়ে জানতে চাইলে সফিপুর কলা ব্যবসায়ী মোঃ রাসেল শেখ লিমন জানান, বাগান থেকে কলা কাটার পর আমরা কিনে নিয়ে আসি দোকানের ভেতর রেখে ফানায় ফানায় পৃথক করা হয়। এক পর্যায়ে বালতি বা ড্রামের মধ্যে পানির সাথে ওই কলা ধুলা বালি পড়ে তাই পানি দিয়ে পরিস্কার করা হয় কোন কেমিক্যাল দেওয়া হয় না। কালিয়াকৈর বাজার করতে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন,যারা খাদ্য দ্রব্যে এ সব কেমিক্যাল মিশায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না যার ফলে দিনদিন এসব বেড়েই চলেছে। এসব কেমিক্যাল মিশ্রিত খাদ্য খেয়ে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তও হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.খায়ারুজ্জামান জানান, বিষাক্ত এসব দাহ্য পদার্থ মিশানো কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং সাথে সাথে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, কেমিক্যাল মিশ্রিত কোন খাদ্য গ্রহণ করলে তার প্রভাব পড়ে লিভার এবং কিডনীর উপর। ওইসব খাদ্য গ্রহণের পর তা দাহ্যে পরিণত হওয়ার পর নিঃসরণ ঘটে লিভার এবং কিডনীর মাধ্যমে। ফলে কেমিক্যাল মিশানো খাদ্য শরীরের এই দুটি অংশের উপর প্রভাব ফেললেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিডনীকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ করে।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কাজী হাফিজুল আমিন জানান, কলার মধ্যে যদি রাসায়নিক ক্যামিক্যাল মিশায়ে কলা পাকানো হয় তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, কার্বাইড খাদ্য দ্রব্য কলার মধ্যে মেশানোর ফলে মানব দেহে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই সব অসৎ বসায়ীদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com