বুধবার, ৩০ Jul ২০২৫, ১১:০২ অপরাহ্ন

কলাপাড়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাড়ি-ঘরের টাকা পরিশোধ না করে বালু ভরাট

কলাপাড়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাড়ি-ঘরের টাকা পরিশোধ না করে বালু ভরাট

মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, কলাপাড়া প্রতিনিধি:: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থানীয় অধিগ্রহণকৃত পাঁচজুনিয়া গ্রামের চার শতাধিক কৃষক পরিবারের জমিসহ বাড়ি-ঘরের টাকা পরিশোধ না করেই জমিতে বালু দিয়ে ভরাটসহ বাউন্ডারি দেয়ালের কাজ করছে। এমনকি দীর্ঘদিন শ্রমিকদের বকেয়া মজুরীর টাকা চাইতে গেলে উল্টো শ্রমিকের নামে রড, সিমেন্ট চুরির মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করে। এনিয়ে এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

কলাপাড়া উপজেলার একই ইউনিয়ন ধানখালীতে তিন ফসলী জমির ওপর ১৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও অপর একটি ১৩২০ মেগাওয়াটের আরপিসিএল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি ডিসেম্বরে উৎপাদনে যাবার অপেক্ষায়। তৃতীয় বিদুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি ১৩২০ মেগাওয়াটের আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প। বর্তমানে এটি পাঁচজুনিয়া ও ধানখালী মৌজার প্রায় দেড় হাজার একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে এ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি। এখানের চার শতাধিক পরিবারের বসতঘরের টাকা পরিষদ না করেই বাউন্ডারি বেড়িবাঁধ দিয়ে বালি ফালানোর কাজ শুরু করে। অনেকে টাকা পাবার আশ্বাসে বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। যাদের যাবার কোনো জায়গা ছিলো না তারা যেতে পারেনি। ওই সময়ে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে ড্রেজার দিয়ে বালি ফেলেছে। এতে অনেক বাড়ি-ঘর বালির চাপা পরে যায়। সরেজমিনে গেলে এখনও বালির নিচে চাপা পড়া অনেক ঘরের চালা দেখা যায়।

সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ছুটে এসে জানিয়েছেন তাদের অভিযোগের কথা। বলেছেন বাউন্ডারি নির্মান শ্রমিকদের এক মাস ধরে টাকা না পাওয়ার অভিযোগের কথা।

মৃধা ট্রের্ডাসের মো: রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ধানখালী ও পাঁচজুনিয়া মৌজার ১৩২০ মেগাওয়াট, আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্ট, বাংলাদেশ এ ইট, বালু সরবরাহ করি এবং এক সপ্তাহ পরে চুক্তি পত্র সম্পাদন করার কথা থাকলেও ১মাস ২দিন হয়ে গেলেও তারা চুক্তি পত্র সম্পাদন করছেনা। কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাইড ইঞ্জিনিয়ার মো. ওমর ফারুক ও মো. রনি কাজের অনুমতি পত্র আছে বলে জানান। আমি কাজের অনুমতি পত্রের হার্ডকপি এবং চুক্তি পত্র চাইলে আজ দিব কাল দিব বলে দিতেছেনা উল্টো তারা আমাকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখাইতেছে এবং উক্ত কাজের অনুমতি পত্রে ২০ দিনের মধ্যে বিল দেওয়ার কথা থাকলেও বিল দিতেছেনা। বর্তমানে তাদের কাছে ৪৭৩৪০০/- (চার লক্ষ তেহত্তর হাজার চারশত) টাকা পাওনা আছে। তাও দিচ্ছে না। উপরন্তু কলাপাড়া থানায় তিন জনের নাম উল্লেখ করে একটি চাঁদাবাজির মামলা করেছে।

বাউন্ডারি প্রাচীর নির্মান শ্রমিক সর্দার মো. নজরুল বিশ্বাস বলেন, আমার শ্রমিকের মোট ৭৭৫ জনের হাজিরার টাকা পাওনা আছে। শ্রমিকের বিল সপ্তাহে দেওয়ার কথা থাকলেও কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাইড ইঞ্জিনিয়ার মো. ওমর ফারুক ও মো. রনি বিল টাকা দিতেছেনা বিল টাকা চাইতে গেলে আজ দিব কাল দিব বলে দিচ্ছেনা।

এব্যাপারে ওই এলাকার মেম্বার আল মামুন বলেন, দেশের উন্নয়ন হোক আমরাও তা চাই। এলাকার কৃষকদের ঘরের টাকা পরিষদ না করে কোন প্রকার কাজ করা যাবে না।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাপাড়া থানার এস আই মো জহিরুল ইসলাম বলেন, দু’পক্ষের দু’টি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ব্যাপারে পিএন এফ কর্পোরেশন এর সাইড ইঞ্জিনিয়ার মো,ওমর ফারুক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্ত্বতা অস্বীকার করে বলেন কৃষকদের ঘরের টাকা পরিশোধ করবে আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের লোকজন। এখানে আমাদের কোনো দায় নাই।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com