বৃহস্পতিবার, ৩১ Jul ২০২৫, ০৯:০১ অপরাহ্ন
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রামের উলিপুরে সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে এক প্রধান শিক্ষকের বদলী বাতিলের অভিযোগ উঠেছে। অনলাইনে বদলী নীতিমালা অনুসারে সয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় বদলীর জন্য নির্বাচিত ঘোষনার একদিন পরে অজ্ঞাত কারনে তা বাতিল করা হয়। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী প্রধান শিক্ষক অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব, জেলা প্রাথমিক অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অন্তঃউপজেলা-থানা বদলী কার্যক্রম শুরু হলে উপজেলার কাশিয়াগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজা বেগম সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী যাদুপোদ্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শুন্য পদে বদলীর জন্য ১ এপ্রিল আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৫ এপ্রিল অনলাইনে বদলীর আবেদনের ফলাফলে ওই বিদ্যালয়ের শুন্য পদের জন্য তিনি নির্বাচিত হন। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে ১৬ এপ্রিল ওই বদলী আবেদন বাতিল করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কোন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শুন্য পদে বদলীর জন্য আবেদন করা হলে বিদ্যালয়ের ওই পদে মামলা চলমান থাকলে সেখানে বদলীর আবেদন নিয়ম অনুযায়ী গ্রহনযোগ্য হবে না। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস যাদুপোদ্দার সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটিতে মামলা দেখানোয় ওই প্রধান শিক্ষকের বদলী আদেশ বাতিল হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যাদুপোদ্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা থাকাকালীন অবস্থায় প্রায় দেড় বছর পূর্বে তিনি অবসর গ্রহন করেন। এরপর থেকেই ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদটি শুন্য রয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে যাদুপোদ্দার সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি শুন্য দেখিয়ে ও বিদ্যালয়ে মামলা নেই উল্লেখ করে উশিঅ/উলি/কুড়ি/১৩২/১ নং স্বারকে গত ২৯ মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। এ কারনে ওই প্রধান শিক্ষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিয়ম অনুযায়ী তাকে যাদুপোদ্দার সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু একদিন না পার হতেই অজ্ঞাত কারনে মামলার অজুহাত দেখিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ওই বদলী আদেশ বাতিলের জন্য প্রতিবেদন দেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমির হোসেন জানান, ওই প্রধান শিক্ষকের বদলীর আবেদন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অগ্রায়ন করা হয়েছে। ওই স্কুলে পূর্বের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। তিনি মামলা চলমান থাকা অবস্থায় অবসরে গেছেন। এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না। এ কারনে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে ভুল তথ্য পাঠানো হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, ওই প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ পেয়েছি। এই বিষয়টি নিয়ে এখন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই অধিদপ্তরে জানানো হবে এবং করণীয় বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হবে। তবে তিনি স্বীকার করেন, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ওই বিদ্যালয়ের মামলা সংক্রান্ত কোন প্রতিবেদন দেয়া হয়নি।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।