বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ১১:১৫ অপরাহ্ন

ইসরাইলি হামলায় আল জাজিরার ৫ সাংবাদিক নিহত

ইসরায়েলের হামলায় আল-জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ছবি: আল-জাজিরা।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, একুশের কণ্ঠ:: কাতার-ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে ইসরাইলের বিমান হামলায় তাদের পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছে। হামলার সময় তারা হাসপাতালের মূল গেটের কাছে সাংবাদিকদের জন্য তৈরি করা একটি তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন বলে আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে।

সোমবার (১১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

নিহত সাংবাদিকরা হলেন- আনাস আল-শরিফ ও মোহাম্মেদ কুরেইকেহ, ক্যামেরাম্যান ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মেদ নৌফাল এবং মোয়ামেন আলিয়া।

আল জাজিরার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডটি ছিল প্রেস ফ্রিডমের ওপর আরেকটি স্পষ্ট ও পূর্বপরিকল্পিত হামলা।

হামলার কিছুক্ষণ পরই ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) হামলার খবর নিশ্চিত করে বলেন, আনাস আল-শরিফ হামাসের সন্ত্রাসী সেলের প্রধান হিসেবে কাজ করছিলেন। তবে নিহত অন্য সাংবাদিকদের বিষয়ে আইডিএফ কোনো মন্তব্য করেনি।

এই হামলায় সব মিলিয়ে মোট সাতজন নিহত হয়েছে বলে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে। প্রথমে তারা তাদের চারজন কর্মীর মৃত্যুর কথা বললেও পরে মোট পাঁচজন নিহত হয়েছে বলে জানায়।

আল জাজিরার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মেদ মোয়াওয়াদ বলেছেন, আল-শরিফ একজন স্বীকৃত সাংবাদিক ছিলেন, যিনি ছিলেন গাজায় কী ঘটছে তা বিশ্বকে জানানোর ‘একমাত্র কণ্ঠস্বর’।

যুদ্ধের পুরোটা সময় জুড়ে ইসরাইল আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের গাজায় মুক্তভাবে সাংবাদিকতা করার অনুমতি দেয়নি।

মোয়াওয়াদ বলেন, তারা তাদের তাঁবুতেই হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। তারা রণাঙ্গন থেকে কাভার করছিলেন না। বাস্তবতা হলো ইসরাইলি সরকার গাজার ভেতর থেকে যে কোনো চ্যানেলের সংবাদ পরিবেশন বন্ধ করে দিতে চায়। এটা এমন কিছু যা আমি আধুনিক ইতিহাসে এর আগে আর দেখিনি।

আল-শরিফ (২৮) মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট দিয়েছিলেন। তাতে তিনি গাজা শহরের মধ্যে ইসরােইলের ব্যাপক বোমাবর্ষণের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।

একটি পোস্ট পাবলিশ করা হয়েছে তার মৃত্যুর পরে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি আগেই লেখা ছিল এবং তার কোনো বন্ধু পাবলিশ করেছে।

হামলার পরের দু’টি গ্রাফিক ভিডিওতে লোকজনকে লাশগুলো বহন করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এর মধ্যে একজন মোহাম্মেদ কুরেইকেহর নাম বলছিলেন। আর একজন মিডিয়া ভেস্ট পরিহিত একজন বলছিলেন লাশগুলোর মধ্যে একটি আনাস আল-শরিফের।

আইডিএফের বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, আল-শরিফ সাংবাদিকদের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল এবং তিনি ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিক ও আইডিএফ সৈন্যদের লক্ষ্য করে রকেট হামলার জন্য দায়ী।

গত মাসে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক, জাতিসঙ্ঘ ও কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট তিনটি আলাদা বিবৃতিতে আল-শরিফের সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছিল।

আল জাজিরা গাজা উপত্যকায় তাদের সংবাদদাতা ও সাংবাদিকদের টার্গেট করে প্রচারণার অভিযোগ করেছিল আইডিএফের বিরুদ্ধে।

তারা আরো বলেছিল, তাদের সাংবাদিকদের ওপর হামলাকে জাস্টিফাই করার জন্যই এ ধরনের বিপজ্জনক উস্কানি দেয়া হচ্ছে। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় সামরিক অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ১৮৬ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com