রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৫২ অপরাহ্ন
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি,ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম॥ চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সরেঙ্গা এবং জুঁইদন্ডি ইউনিয়নের খুরুস্কুল ওয়ার্ডের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকোর মাধ্যমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয় দুই গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে এই এলাকার বাসিন্দারা অবহেলিত। এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে দুই গ্রামের ২০ হাজারের অধিক মানুষ দুঃসহ যন্ত্রণায় এক স্থান হতে অন্য স্থানে যাতায়াত করে। গ্রীষ্মকালে এ বিপজ্জনক সাঁকো দিয়ে কোন রকমে পারাপার হলেও বর্ষাকালে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাওয়া এক প্রকার বন্ধ থাকে। স্থানীয়রা এ বাঁশের সাঁকোর স্থানে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রায়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সরেঙ্গা এবং জুঁইদান্ডি ইউনিয়নের খুরুস্কুল ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী সাপমরা খালের ওপর ৫৫ মিটার বাঁশের জোড়াতালি দিয়ে বানানো হয়েছে সাঁকো। ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা পারাপার হয়। সাঁকোটি পার হতে ভয়ে যে কোন মানুষের শরীর কেঁপে উঠবে। সামান্য বেখেয়ালে একটু পা পিছলালেই পড়তে হবে সোজা গভীর খালে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সাঁকোটি পার হয়ে যেতে হয় এপার-ওপার। একপাশ দিয়ে একজন আসলে অপর পাশ দিয়ে আরেকজন আসা যায় না।
আদিফুল ইসলাম নামের টিএমসি হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জানায়, ছোট থেকেই এই সাঁকোটি দেখে বড় হয়েছি। এই সাঁকোটির কারণে বাড়ির পাশের জে কে হাইস্কুলে পড়তে পারি না। অনেক দূরের টিএমসি হাইস্কুলে পড়তে হচ্ছে।
আবু সৈয়দ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, জনপ্রতিনিধিরা সব সময় আমাদের আশ্বস্ত করে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। আমরা আমাদের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে বিষয়টি নিয়ে অনেকবার বলেছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, এটা তার মাথায় আছে। তাহলে জানি না এই সাঁকোটির কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না কেন?
জুঁইদান্ডি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ ইদ্রীস বলেন, ভূমিমন্ত্রী মহোদয় এটা নিয়ে সেতু মন্ত্রণালয়ে ডেমি অফিসিয়াল লেটার পাঠিয়েছেন। আশা করি, শীঘ্রই এটা বাস্তবায়িত হবে।
আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী তাসলিমা জাহান বলেন, আমাদের কাছে ঢাকা থেকে এটার ইনফরমেশন দেয়ার বিষয়ে চিঠি এসেছিল। আমরা সব ইনফরমেশন পাঠিয়েছিলাম। তবে এখন পর্যন্ত কেন এটির অনুমোদন মিলছে না বিষয়টা বুঝে আসছে না। এই সেতুটি মাত্র ৫৫ মিটারে। আনোয়ারায় এ রকম অনেক সেতুর অনুমোদন চলে আসছে, কিন্তু এটার অনুমোদন আসে না। আমি বিষয়টি সম্পর্কে আবারও খোঁজ নিয়ে দেখব।