মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন

অসুস্থতাকে জয় করে ভোট দিলেন ৭৩ বছরের প্যারালাইসড তাজুল ইসলাম

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: হোক না উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, থাকুক না শারীরিক অসুস্থতা, তাতে কি তবু ভোট দিতে এলেন। বয়স ৭২ পেরিয়ে ৭৩ এ পৌচেছে। অটোরিক্সায় এবং পরে আরেকজনের উপর ভর দিয়ে এসে ভোট দিলেন কাচু মিয়া নামে এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক ব্যক্তি।

মঙ্গলবার (২২ মে) বিকেলে আদিতমারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাপ্টিবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এভাবেই অসুস্থতাকে জয় করে ভোট দিয়ে গেলেন সম্পুর্ণ প্যারালাইসড তাজুল ইসলাম।

কাচু মিয়া আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের জামুরটারী এলাকার মৃত নইমুদ্দিনের ছেলে।

এবারে ভোটে নজরের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল আদিতমারী উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম (আনারস)। আক্ষরিক অর্থে নির্বাচন হলেও আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের (মটর সাইকেল) মধ্যে এই নির্বাচন রাজনীতির উত্তাপে অন্যমাত্রা নিয়েছিল। আদিতমারী উপজেলাবাসীর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, নির্বাচনে যেন কেউ ঘরে বসে না থাকে। সবাই যেন ভোট দিতে আসেন এবং আওয়ামীলীগের সম্পাদক আলমকেই যেন ভোট দেন। তার এই আবেদনে সাড়া দিয়ে কাচু মিয়ার মতো নবীন, প্রবীণ থেকে নবাগত সকলেই ভোট দিতে এলেন। তিন বছর আগেও কাচু মিয়া সুস্থ অবস্থায় ভোট দিয়েছেন। পরনে সাদা রঙের গেঞ্জি আর লুঙ্গি পরে অটো রিক্সায় চরে কাচু মিয়া এলেন ভোট দিতে।

হাতে পরিচয়পত্র হিসেবে একটি কার্ড তুলে ধরে ভোট দেওয়ার পর আঙুলে দেওয়া কমিশনের ছাপও দেখালেন। বললেন, শারীরিক অসুবিধা আছে ঠিকই, তবু ভোটদান একজন দায়িত্বশীল নাগরিকেরই পরিচয়। কাকে ভোট দিলেন, সেটা গোপন রাখলেও মুখে বললেন রফিক ভাই আমাদের সবার মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন।

তেহাত্তর বছরের কাচু মিয় প্রকাশ্যেই আওয়ামীলীগের সুখ্যাতি গাইয়ে বললেন এবার জয় আমাদেরই হবে। পায়ে ছিল না কোন চটি, শক্তিবিহীন দুইহাতে আরেকজনকে ধরে ভোট দিয়ে বেরিয়ে বললেন, বহু বছর ধরে ভোট দিয়ে আসছি। তাই উপজেলা নির্বাচন হলেও এই ভোট বাদ দেব কেন? তাই দুপুরে খাওয়ার পর অটোতে চরে এসে ভোট দিয়ে গেলাম।

অটো রিক্সায় করে সাপ্টিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে এসেছিলেন কাচু মিয়া। ৭৩ বছরের কাচু মিয়াকে বুথে নিয়ে আসেন তাঁর পার্শ্ববতী জমসেদ আলী নামে এক ব্যক্তি। তিন বছর থেকে অসুস্থজনিত কারনে অসুস্থতায় ভুগছেন কাচু মিয়া। তারপরেও এলাকবাসী এবং দায়িত্ববোধের জন্য একটি ভোটও মূল্যবান, তা জানাতে ভুললেন না তিনি। ভোট দিয়ে আবার অটোয় চড়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পথে তিনি বললেন রফিকুল আলম আমার প্রতিবেশী তাকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি। মানুষের জন্য সে কী কাজ করছে, তাও দেখেছি। চাই সে নির্বাচনে জয় লাভ করুক এটাই কামনা করি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com