রবিবার, ২০ Jul ২০২৫, ০৭:০৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক দোহার থেকে:: যেই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশী সময় শিক্ষকতা করেছেন। চলতি মাসের ২০ তারিখেই তার অবসরে যাবার কথা ছিলো। কিন্তু সন্ত্রাসীদের ও শত্রু পক্ষের কাছে হার মেনে চিরদিনের জন্যই তিনি অবসরে চলে গেলেন। যেখানে আর কারো সাথে দেখা মিলবে না। প্রিয় প্রতিষ্ঠানেও আর ছায়া দেখা যাবে না। শিক্ষক ছাত্র রাজনৈতিক সহকর্মী ও স্বজনদের অশ্রু ভেজা চোখে পুরো মাঠ জুড়েই যেন শোকের মাতম। নির্বাক স্ত্রী নাহিদাকে জড়িয়ে ধরে আছে তাঁর প্রতিষ্ঠানের সহপাঠিরা। এমন এক শোকাবহ পরিবেশে হাজারো মানুষের চোখের জলে চিরবিদায় নিলেন সকলের প্রিয় শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতা হারুনুর রশিদ (হারুন মাষ্টার)।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় বাহ্রা হাবিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে তাঁর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দোহার ও নবাবগঞ্জের বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী স্থানীয় বাসিন্দা, স্কলের শিক্ষক ছাত্র অভিভাবকসহ শুভাকাঙখিরা ছুটে আসে বাহ্রা স্কুল মাঠে। প্রিয় শিক্ষক হারুন মাষ্টারকে শেষবারের মতো দেখতে। মাঠের কোণে দাঁড়িয়ে কাঁছে মো. স্বপন। তিনি বলেন, দোহারের নয়াবাড়ী ইউনিয়নের মানুষের একজন আপনজন ও ন্যায় বিচারক হারালো। তাঁর কারণে এতো দিন জুলুমবাজরা নিরব ছিলো। পদ্মা নদীর পাড়ের শান্ত নয়াবাড়ী ইউনিয়ন হয়তো অশান্ত হয়ে উঠবে। আল্লাহ যেন খুনিদের বিচার করেন।
আব্দুল মান্নান সকলের কাছে ভাইয়ের জন্য দোয়া চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বাকরুদ্ধ হয়ে ফ্যাল ফ্যাল তাকিয়ে থাকেন। এসময় নামাজে জানাযায় উপস্থিতি সকলের চোখে মুখে ছিলো স্বজন হারানোর শোকের ছাপ। হারুনুর রশিদের নামাজে জানাযায় ইমামতি করেন বাস্তা দারুল উলুম মসজিদের ইমাম মাওলানা কারী হাফেজ আবদুল ওয়াহাব দোহারী। এরপর তাঁকে শিলাকোঠা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে বিএনপি নেতার এ হত্যার ঘটনায় দোহার থানায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে পুলিশ একাধিক ইউনিট ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারে মাঠে কাজ করছে বলে জানান দোহার সার্কেলের জেষ্ঠ্য সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম। তিনি আরো বলেন, ময়নাতদন্ত ও লাশের দাফন কাজে ব্যস্ত থাকায় নিহতের পরিবার এজাহার দিতে পারেনি। লিখিত পেলেই মামলা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকার দোহার উপজেলার নয়াবাড়ী ইউনিয়নের বিএনপির সাবেক সভাপতি ও স্কুল শিক্ষক হারুনুর রশিদ (হারুন মাষ্টার)কে বুধবার সকাল ৬টার দিকে প্রাত:ভ্রমনে বের হলে একটি সন্ত্রাসী চক্র তাঁকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। তাঁর শরীরে একাধিক গুলি ও কোপের চিহ্ন পাওয়া গেছে।