সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

রায় শুনতে আদালতে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া

ই-কণ্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় শুনতে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত প্রাঙ্গনে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত আদালত এলাকায় পৌঁছান তিনি।

এরপর ব্যারিকেড সরিয়ে শুধু খালেদা জিয়ার গাড়িটিকে আদালত প্রাঙ্গনে ঢুকতে দেয়া হয়েছে। গাড়িকে ঘিরে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা স্লোগান দিচ্ছেন। খালেদা জিয়াসহ আরও দুই আসামির উপস্থিতিতে কিছুক্ষণের মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার কাজ শুরু করবেন বিচারক ড. আখতারুজ্জামান।

এর আগে বেলা পৌনে ১২টায় গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে কড়া পুলিশি প্রহরায় আদালতের উদ্দেশে রওনা দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার কয়েকজন নিকটাত্মীয়ও আদালতে এসেছেন। তার গাড়িবহরের নিরাপত্তায় ছিলেন চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স-সিএসএফের সদস্যরাও। বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহর গুলশান-১, গুলশান-২ হয়ে আদালতের উদ্দেশে রওনা করে।

গাড়িবহর নাবিস্কো মোড় পার হয়ে তেজগাঁওয়ের সাত রাস্তায় পৌঁছলে এতে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী যুক্ত হয়। তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় উভয়পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর এফডিসি মোড়ে পৌঁছতেই শত শত নেতাকর্মী এতে যুক্ত হয়ে পড়েন।

এর পর নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িকে সামনে-পেছনে ঘিরে ধরে স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যান। এতে গাড়িবহরের গতি শ্লথ হয়ে যায়। মগবাজার মোড় পর্যন্ত পৌঁছে গাড়িবহর অনেকটা থেমে এগোতে থাকে। পরে মিন্টো রোড, কাকরাইল, হাইকোর্ট ও দোয়েল চত্বর হয়ে খালেদা জিয়া বকশীবাজারের আদালতে পৌঁছান। এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে আদালতে পৌঁছান বিচারক ড. আখতারুজ্জামান।

এর পর থেকে তিনি নিজের খাসকামরায় অবস্থান করছেন। সকাল থেকেই খালেদা জিয়ার আইনজীবী সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, বর্তমান সভাপতি জয়নুল আবেদীন, মীর নাসির উদ্দীন, নিতাই চন্দ্র রায়, সানাউল্লাহ মিয়া, আজিজুর রহমান খান বাচ্চু, আমিনুল ইসলাম ও জয়নুল আবেদীন মেজবাহ আদালতে উপস্থিত রয়েছেন।

এ ছাড়া দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল, রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুল মান্নান, মীর আবদুস সালাম প্রমুখও উপস্থিত আছেন। দুই দফায় নাম-প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিখে সেখানে পৌঁছেছেন সাংবাদিকরাও। তবে আদালত প্রাঙ্গণে মোবাইল জ্যামার বসায় সংবাদকর্মীরা সর্বশেষ খবর জানাতে পারছেন না।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রায় উপলক্ষে কারাগার থেকে মামলার দুই আসামি সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদকে আদালতে আনা হয়েছে।

এ মামলার অপর তিন আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী পলাতক রয়েছেন। এ কারণে তাদের অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করবেন আদালত। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ মামলায় ২৩৬ কার্যদিবসে ৩২ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ২৮ কার্যদিবস ধরে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর পর ১৬ কার্যদিবস উভয়পক্ষের (দুদক ও আসামিপক্ষ) যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ২৫ জানুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com