বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন

রায়ের আগে শেষ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন খালেদা জিয়া

ই-কণ্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় ঘোষণার আগের দিন শেষবারের মতো বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন।

আজ বুধবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর গুলশানে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার রাতে গুলশান কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করবেন বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান। এ মামলার অন্যতম আসামি খালেদা জিয়া। অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এতিম তহবিল নামে নতুন একটি হিসাব খোলা হয় এবং বিদেশ থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা আসে ওই হিসাবে। পরে ওই তহবিল থেকে দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে স্থানান্তর করা হয়। অভিযোগ আনা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেখান থেকে আসামিরা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা আত্মসাত করেন। মামলা দায়েরের ১৩ মাস পর ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হারুণ-অর-রশিদ।

এ মামলা প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত একটি মামলা। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠনের সময় বেগম জিয়া দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আর এই মামলাগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুই নেত্রীকে মাইনাস করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতার পালা বদল হলে সরকার শেখ হাসিনার সব মামলা প্রত্যাহার করে নিল অপরদিকে খালেদা জিয়ার একটি মামলাও প্রত্যাহার করা হলো না। এতে স্পষ্ট বুঝা যায় এটি একটি রাজনৈতিক মামলা। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদকের করা এই ঠুনকো মামলাটিতে আগেই খালাসের রায় হয়ে যাওয়া উচিত ছিল।

বার সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন দেখলেই বুঝা যায় এটা বানানো, নাটকটি সাজানো। যেভাবে আওয়ামী সরকারের মন্ত্রীরা রায়ের আগেই রায় বলে দিচ্ছেন তা প্রমাণ করে সরকার প্রহসনের রায়ের জন্য নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আমার বিশ্বাস আদালত নিরপেক্ষ বিচার করলে বেগম খালেদা জিয়া খালাস পাবেন। এ মামলার সম্ভাব্য রায় নিয়ে বিএনপি অভিযোগ করেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আদালতে হস্তক্ষেপ করেছে। সরকার রায় তৈরি করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে তারা। রায়ের আগে বিগত কয়েক দিনে কয়েকশ নেতাকর্মীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এ মামলাটি বর্তমান সরকারের আমলে দায়ের হয়নি। ফলে এ মামলার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আদালত স্বাধীনভাবে মামলার বিচারকাজ পরিচালনা করেছে। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, নৈরাজ্য পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হলে তা কঠোর হাতে দমন করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com