সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন

রাবিতে আচার্যহীন সমাবর্তন, সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে তোলপাড়

রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববদ্যিালয়ে আগামী ২৪ র্মাচ দশম সমার্বতন হতে যাচ্ছে। সমার্বতনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববদ্যিালয়ের আর্চায আব্দুল হামিদের পরিবর্তে তার প্রতিনিধি হিসাবে সভাপতত্বি করবনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহদি বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। তবে শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের দশম সমাবর্তনের সভাপতিত্ব করবেন এই বিষয়টি জানার পর সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাবির একাধিক সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, যে শিক্ষামন্ত্রীর সময় একের পর এক প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটইে চলছে, যে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তার কাছ থেকে সমার্বতনের সার্টিফিকেট নিতে চাই না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাবির সাবেক শিক্ষার্থী নাসির উদ্দিন লিখেছেন, ‘আগামী ৭ তারিখের যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা যেখানে একজন নোবেলজয়ী রসায়নবিদ সেখানে রাবিতে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানকারী নাহিদ আংকেল। রাষ্ট্রপতি কিছুদিন আগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন, অহরহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান আর রাবিতে অপারগ। জয় হো রাবি প্রশাসন।’
রাবির র্উদু ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সমার্বতনে রেজিস্ট্রেশনকারী দেলোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী একজন বিতর্কিত ব্যাক্তি। তিনি আসবে আগে জানলে রেজিস্ট্রেশন করতাম না। তাঁর কাছ থেেক সার্টিফিকেট নিব না, আমি চায় না সে আমাদের সর্মাবতনে আসুক।’
আরেক শিক্ষার্থী সালাহ উদ্দিন আহমেদ লিখেছেন,‘ গত এক বছর ধরে সুদ খাচ্ছেন, প্রয়োজনে আরও এক বছর সুদ খান, তবুও রাষ্ট্রপতিকে প্রতিনিধি হিসাবে সবচেয়ে অথর্ব মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে অতিথি কইরেন না। আর তা না পারলে, সমাবর্তনের টাকাটা রিফান্ড করে দিয়েন। সুদ লাগবে না, শুধু আসল দিলেই হবে!
শুধু সাবেক শিক্ষার্থীরাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এ নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরী হয়েছে। বাংলা বভিাগরে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল মৃধা বলেন, তিনি দেশের একজন বিতর্কিত মন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমন বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমার্বতনে আর্চাযরে পরিবর্তে এমন একজন বিতর্কিত মন্ত্রী আসুক সেটা একদমই কাম্য না।
এছাড়া অনেকে বলছেন, দেশের অন্যতম বৃহত্তম বশ্বিবদ্যিালয়ে যদি রাষ্ট্রপতি না আসে তাহলে আসবে কোথায়? সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী তানভির হোসনে ফেইসবুকে বলেন, সমাবর্তন আর আচার্য (মহামান্য রাষ্ট্রপতি) পরস্পর অনুষঙ্গ। এর একটিকে ব্যতিরেখে অন্যটি ছেলেখেলা বৈ আর কিছু নহে। ঠিক যেন, লবণ ছাড়া তরকারী আর চিনি ছাড়া শরবত তুল্য।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পলাশ কুমার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্চায হিসেবে রাষ্ট্রপতি আমাদের অভভিাবক। রাষ্টপতি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যেতে পারলে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ বিশ্ববদ্যিালয় হিসেবে পরিচিত রাজশাহী বশ্বিবদ্যিালয় কেন তাকে পাবে না?
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর শাহ আজম শান্তনু বলেন, ৭৩ এর এ্যাক্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমার্বতনে আর্চায উপস্থিত থাকবেন। যার ফলে শিক্ষার্থীদের এক্সপক্টেশন ও অনকে। সে ক্ষেত্রে ছাত্রদরে মন খারাপ হওয়ারই কথা।
প্রসঙ্গত, সমাবর্তনের জন্য রাবি প্রশাসন চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের সদয় সম্মতি চেয়ে চিঠি পাঠায়। গত ১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি তার প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করলে শিক্ষামন্ত্রী আগামী ২৪ মার্চ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়। এবারের সমাবর্তনে মোট ৬ হাজার ৯ গ্রাজুয়েট রেজিস্ট্রেশন করেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com