শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৪ অপরাহ্ন

বিরামপুরে মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

একলাছুর রহমান,বিরামপুর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা::
দিনাজপুর জেলার বিরামপুরের খাঁনপুর কারামাতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার ছাত্র অভিভাবক মোঃ আবুল কাশেম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড মহাপরিচালক রবাবর একটি লিখিত আবেদন করে এই অভিযোগ দাখিল করেন।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, খাঁনপুর কারামাতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শহিদুল ইসলাম ২৬/১০/১৯৯৫ ইং সালে পাঁচ বছরের ভূয়া অভিজ্ঞতার সনদ দেখিয়ে সুপার পদে নিয়োগ নিয়েছেন। সুপারের অদক্ষতায় অত্র মাদ্রাসায় অনিয়ম,দূর্নীতিসহ শিক্ষাগত অবকাঠামো দূর্বল হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসী প্রতিষ্ঠানটি রক্ষার্থে অনেক অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি। গত ১৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে সুপার শহিদুল ইসলাম অনিয়ম করে কৌশলগত ভাবে নির্বাচন না দিয়ে তাঁর পছন্দের ব্যক্তি মোঃ লুৎফর রহমানকে কমিটির সভাপতি করে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করেলে ওই কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা হয়। উক্ত কমিটির মেয়াদ যদিও ১৮ মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত থাকলেও সুপার অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বহাল রাখেন। এর পর এডহক কমিটি গঠন করে খাঁনপুর কারামাতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শহিদুল ইসলাম একজন সহকারি শিক্ষক কম্পিউটার ও একজন এবতেদায়ী শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগে উক্ত এডহক কমিটির সভাপতি মোঃ লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে দিনাজপুর সহকারি জজ আদালতে মামলা হয়। মামলা নং-৩/২০১৭ ইং। ওই দুই শিক্ষক নিয়োগের বৈধতার বিষয়ে আদালত কর্তৃক স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং মামলাটি চলমান রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। আরো জানা যায়, সুপার শহিদুল ইসলাম এলাকাবাসি কর্তৃক অনুদান স্বরুপ প্রদত্ত সম্পদ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যবহার না করে তাঁর পছন্দমত ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে যোগসাজসে আতœসাত করে আসছেন। নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে অযোগ্য লোকদের নিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করে অত্র খাঁনপুর কারামাতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শহিদুল ইসলাম মাদ্রাসার অভাবনীয় ক্ষতিসাধন করে আসছেন বলে আবুল কাশেম অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে মাদ্রাসা সুপার শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার সুপার পদে নিয়োগের কোন অনিয়ম নেই। অভিযোগকারী আবুল কাশেম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিতে সদস্য ছিলেন। মাদ্রাসার অনুদানের সম্পত্তিসহ অন্যান্য আয়ের বিষয় এড়িয়ে তিনি বলেন, প্রায় ৯ বিঘা জমির মামলা রয়েছে। কমিটি গঠনসহ যা যা হয়েছে সব নিয়ম-নীতি মতোই হয়েছে। এতে অনিয়ম ও দুর্নীতির কিছুই নেই বলে তিনি জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে থাঁনপুর কারামাতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি ও বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি মোঃ লৎফর রহমান জানান, মাদ্রাসার কমিটির মামলায় আমিই রায় পেয়েছি। আমার বিরুদ্ধে য়ে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
এ বিষয়ের বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (মোঃ তৌহিদুর রহমান) জানান, অভিযোগ পেয়েছি তবে বিষয়টি দেখার জন্য শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছি।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক বিল্লাল হোসেন বলেন, শিক্ষা বোর্ডে কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে প্রয়োজনীয় তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এলাকার সর্বস্থরের সচেতন মহলসহ অত্র মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রী অভিভাবকবৃন্দ মাদ্রাসার ভৌতিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অনুদানের সম্পত্তির আয়ের হিসাব,অনিয়ম ও দূর্নীতির সুষ্ঠ তদন্ত্র পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে পেতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com