মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন
আফরোজা বেগম, বদরগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধিঃঃ
রংপুরের বদরগঞ্জে শ্বশুড় বাড়ির দরজা থেকে মোজাহারুল ইসলাম(২৭) নামে এক মসলা ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি পৌর শহরের ফেসকিপাড়ার ইউনুস আলীর ছেলে। ৭ফেব্রুয়ারি বুধবারসকালে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকার লোকজন থানায় খবর দেয়। সকালেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণের পর লাশ উদ্ধার করে। এঘটনায় নিহতের বড়ভাই জাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে এজাহার নামীয় আসামী ও নিহতের স্ত্রী শিউলি বেগম ,শ্বশুড় আবু বক্কর ও শাশুরি মরজিনা বেগমকে গ্রেফতার করে। বদরগঞ্জ থানার ওসি আখতারুজ্জামান প্রধান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা– এতে কোন সন্দেহ নেই। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
জানা যায়, মোজাহারুল ইসলামের বাড়ি বদরগঞ্জ পৌরশহরের ফেসকিপাড়ায় হলেও তিনি দিনাজপুরের পার্বতীপুর শহরে মসলার ব্যবসা করেন। সেখানে ব্যবসা করাকালিণ তিনি বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ওই স্ত্রীর গর্ভে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নিলেও বেশ ক’বছর আগে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর চার বছর আগে তিনি বদরগঞ্জ রেলবস্তির খালপাড়ার আবু বক্করের মেয়ে শিউলি বেগমকে বিয়ে করেন। নিহতের স্বজনদের দাবী- শিউলির পড়শোনায় আগ্রহ থাকায় সে কলেজে ভর্তি হয় এবং চলতি বর্ষে সে বিএ পাশ করে। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। এঅবস্থায় গত মঙ্গলবার(০৬ফেব্রুয়ারি) সকালে শিউলি একাকি বাবার বাড়িতে আসেন। পরদিন সকালে বাড়ির দরজায় মোজাহারুলের লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে- লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এথেকে পুলিশ ধারণা করছে তাকে অন্য কোথাও সুকৌশলে হত্যার পর বাড়ির বাইরে লাশ ফেলে রাখা হয়।
এদিকে এলাকাঘুরে জানা গেছে- মোজাহারুল মসলার ব্যবসা করলেও সে ছিল মাদকাসক্ত। একারণে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। আর সেই বিবাদ মেটাতে শিউলির দুলাভাই ও কলেজ রেলগুমটি এলাকার বাসিন্দা আতাউর একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোজাহারুল ভায়রার বাড়িতে আসেন। গভীর রাত পর্যন্ত আতাউরের বাড়িতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মোজাহারুল ও শিউলির মধ্যে প্রচ- বাক-বিত-া হয় এবং সকালে মোজাহারুলের লাশ পাওয়া যায়। লোকজনের ধারণা- মোজাহারুলকে সেখানেই হত্যা করে লাশ শ্বশুড় বাড়ির দরজায় ফেলে রাখা হয়।
মামলার বাদী জাহারুল ইসলাম দাবী করেন- শিউলি পরকীয়ায় আসক্ত। এতে বাধা দেয়ায় মোজাহারুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
মামার তদান্তকারি অফিসার এস আই তপন বলেন, এই হত্যাকা- পরিকল্পিত । আমরা এই হত্যা মামলার আসামি তিন জনকে গ্রেফতার করেছি। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।