শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন

প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: কমলার নতুন স্বপ্ন, ট্রাম্পের পুরনো প্রতিশ্রুতি

কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, একুশের কণ্ঠ:: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আর মাত্র তিন দিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যেই ‘আর্লি ভোট’-এর সুবিধা নিয়ে চার কোটি ৮০ লাখ আমেরিকান তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন। জনমত সমীক্ষায় জানা গেছে, অর্ধেকের বেশি মানুষ (৫৪ শতাংশ) ভোটের দিন, অর্থাৎ আগামী মঙ্গলবারের আগেই ভোট দেওয়ার পালা চুকিয়ে ফেলতে চান।

জনমত সমীক্ষা আরও বলছে, দুই অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে টক্কর হবে সমানে সমানে। চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে দুজনেই ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। দুই প্রার্থীই এই ভোট ময়দানে প্রভূত পরিমাণ অর্থ ঢেলে দিচ্ছেন। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সবার দৃষ্টি গিয়ে পড়ছে আটটি গুরুত্বপূর্ণ ‘সুইং স্টেট’-এর দিকে, যে প্রদেশগুলো সম্ভবত এই দৌড়ের ফলাফল নির্ধারণ করবে। প্রথম অশ্বেতাঙ্গ মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এর আগেই ইতিহাস গড়েছেন কমলা হ্যারিস। এখন সবার মনে একটাই প্রশ্ন, আগামী মঙ্গলবার ভোটে জিতে কি দেশের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী?

ট্রাম্পের তাসভোটের বিতর্কে আধিপত্য বজায় রেখেছে অর্থনীতি। মূল্য বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক বৈষম্য এবার ভোটারদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সেটাই তার প্রচারে তুরুপের তাস করেছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনা মহামারির পরে আমেরিকার বিধ্বস্ত অর্থনীতির দায় তিনি সম্পূর্ণ চাপিয়ে দিয়েছেন জো বাইডেন সরকারের ওপরে। তার যুক্তি, দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য কর কাঠামোর পরিবর্তন প্রয়োজন।

প্রথম থেকেই স্পষ্ট, ট্রাম্প তার ‘আমেরিকা প্রথম’ এবং ‘আমেরিকাকে ফের শ্রেষ্ঠ করে তোলো’- এই ধরনের পুরনো প্রতিশ্রুতি দিয়েই হোয়াইট হাউসে ফিরে আসতে চান। প্রত্যাশা মতোই চীন, অভিবাসন ও বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন তিনি। আশ্বাস দিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানেও সচেষ্ট হবেন। সরে আসবেন বাইডেন প্রশাসনের ইসরাইল নীতি থেকে। শক্ত হাতে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করার পক্ষে বারবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি। বলেছেন, ক্ষমতায় এলেই বেআইনি অভিবাসীদের দেশ থেকে ‘ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে’ দেবেন।

অর্থাৎ, ২০১৬ সালে যে কৌশল অবলম্বন করে বিজয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প, এবারও সেটাই আঁকড়ে ধরেছেন তিনি। শক্তপোক্ত অর্থনীতি, জোরদার জাতীয়তাবাদ ও কড়া অভিবাসন আইনের প্রতিশ্রুতি তাকে ফের মসনদে বসাবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত দেশের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট।

কমলা হ্যারিসের হাতিয়ার: ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিস প্রথম থেকেই স্বাস্থ্য পরিষেবা ও শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে ইতিবাচক পদক্ষেপ করার ওপরও জোর দিচ্ছেন তিনি। তাছাড়া, বেকারত্ব কমাতে এবং বিভিন্ন পরিকাঠামোয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জো বাইডেন সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, নিজের প্রচারে বারবার তুলে ধরেছেন কমলা।

হ্যারিস একদিকে যেমন বাইডেন প্রশাসনের কাজের দিকগুলো তুলে ধরেছেন, তেমনই আবার তার দৃষ্টিভঙ্গি যে জো বাইডেনের থেকে স্বতন্ত্র, সেটাও বার বার বলছেন। গর্ভপাতের অধিকার ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নারী ভোটার ও তরুণ প্রজন্মকে পাশে পেতে চান ৬০ বছর বয়সি হ্যারিস। ব্যক্তিস্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে এক নতুন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তিনি।

সূত্র: আনন্দবাজার

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com