সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, একুশের কন্ঠ : ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিরব সাক্ষি ইছামতি নদী। যার বিভিন্ন অংশ ইতিমধ্যে দখল করে গিলে খাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র।
অনেকেই গড়ে তুলেছেন পাকা ভবন ও ভ্রাম্যমান এবং স্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আর এসব দখলবাজদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, ধনী কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সচেতন জনসাধারনের দাবী এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর না থাকায় দখল আর দূষনে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মুখে ধাপিত ইছামতি নদীটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়নের বাগমারা বাজার, কলাকোপা পোদ্দার বাজার, বান্দুরা বাজার, নয়নশ্রী ইউনিয়ন ও শিকারীপাড়া সংলগ্ন দাউদপুর, কোমরগঞ্জ, হাট-বাজার সংলগ্ন একাধিক স্থান, এছাড়া আগলা বাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীর বিভিন্ন অংশ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া নদীটির বিভিন্ন অংশে একাধিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও নদীর পাড়ের বসত বাড়ির লোকজন পাইপের মাধ্যমে তাদের সকল ধরনের বর্জ ফেলে নদীটিকে দূষনের মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এব্যাপারে একাধিক বার নদী কমিশন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তাদের কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে বান্দুরা বাজার এলাকায় ইছামতি নদীতে বাজারে সমস্ত বর্জ ফেলায় প্রতিনিয়ত দূষনের কবলে পড়ছে এখানে নদীটি। বিশেষ করে বেকারী ও খাবারে হোটেলগুলো নদী দূষণে এগিয়ে আছে। বেকারীর মেয়াদ বিহীন খাদ্যপণ্য নদীতে ফেলায় পচা দূগর্ন্ধে নদীর পানি নষ্ট হয়ে গেছে এমন কথা জানান বাজার সংলগ্ন মুলাশিকান্দা এলাকার বাসিন্দা রাহুল গোমেজ। তিনি বলেন, এক সময় এই নদী দিয়ে আমরা ঢাকায় যেতাম। এখন ঢাকায় যাওয়ার নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে। নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। পানি ও নদী দূষণের কারনে এখন মাছ পাওয়া যায় না।
অপরদিকে কলাকোপা ইউনিয়নের বাগমারা বাজার এলাকার ইছামতি নদীর বেশ কিছু অংশ দখলের পায়তারা চলছে। ইতিমধ্যে কিছু ব্যক্তি নদীর পাড়ের জমি অস্থায়ীভাবে দোকান পাট ব্যবসার কাজে ব্যবহার করছেন।
বাগমারা বাজারের সবজী বিক্রেতা মো. সবুজ(৩৪) বলেন, এসব কাজ প্রভাবশালী মানুষরাই করেন। কারন তাদের সাথে উপর মহলের যোগাযোগ আছে তাই সাহস পায়।
উপজেলার কোমরগঞ্জ এলাকার মুদি ব্যবসা আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের এলাকার একাধিক ব্যক্তিবর্গ ইছামতি নদীর অংশ দখল করে পাকা ভবন তৈরী করেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়েছে এছাড়া নিজেরা ব্যবসা করছেন।
এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাহ্রা এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, আমাদের এলাকায় নদীর বিভিন্ন সময় নদী থেকে মাটি ও বালি বিক্রি করা থেকে শুরু করে দখল দূষনে নদীর অবস্থা বেহাল। তাই ইছামতি নদীটি বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) আব্দুল হালিম বলেন, নদী দখলদারদের বিরুদ্ধ নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে। এছাড়া উপজেলার আগলা এলাকাতে অভিযান চালিয়ে ইতিপূর্বে এক দখলদারকে আটক করা হয়। নদী দখল ও দূষণ বন্ধে প্রশানসন তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।