শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

তৃতীয় দিনের মতো শিক্ষকদের ধর্মঘট চলছে

ই-কণ্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:: মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে সারা দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে আজ বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো ধর্মঘট চলছে।

এদিকে, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা আজ টানা ১১ দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। এ ছাড়া শিক্ষকরা বুধবার আবারও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর সাথে দেখা করে তাদের দাবির কথা জানান।

বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের যুগ্ম-আহ্বায়ক জি এম শাওন বলেন, ‘বুধবার বিকেলে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর সাথে বৈঠকে বসি। তিনি আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আমাদের দাবির ব্যাপারে জানাবেন। আশা করছি, প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলে প্রতিমন্ত্রী আবারো আমাদেরকে ডাকবেন এবং আশার বাণী শুনাবেন।’

এই শিক্ষক নেতা আরো বলেন, ‘আমরা জাতীয়করণের দাবিতে টানা ১১ দিন অনশন কর্মসূচি পালন করছি। এ ছাড়া সকল বেসরকারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে একই দাবিতে তিন দিনের ধর্মঘটের আজকে শেষ দিন পালন করা হচ্ছে।’

প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষার ক্ষতি করে আন্দোলন কতটা যৌক্তিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক, বন্ধের জন্য শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু জাতীয়করণ না হওয়ার কারণে আমরা চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।’

আন্দোলনকারী সংগঠনের প্রেস সচিব এনামুল ইসলাম জানান, ৩৮ হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। এদিকে, খোলা আকাশের নিচে অনশন করায় ১২৪ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে শেরপুরের রেখা আক্তার, বি বাড়িয়ার আব্দুল হাকিম, সংগঠনটির সহ-সভাপতি বিপ্লব কান্তি দাসকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

শিক্ষকরা গত ১০ জানুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে গত ১৫ তারিখ থেকে একই স্থানে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। তীব্র শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে টানা ১৬ দিনের মতো অতিবাহিত করছেন তারা। তবে গত কয়কেদিনে শিক্ষামন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তাদের সাথে দেখা করেন। কিন্তু দাবির ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো বার্তা না পাওয়ায় তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (নজরুল), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (শাহ আলম-জসিম), জাতীয় শিক্ষক পরিষদ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন সমন্বয়ে গঠিত বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের ব্যানারে তারা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করছেন।

বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ কমিটির আহবায়ক মো. আব্দুল খালেক বলেন, এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা জাতীয়করণের দাবিতে সারা দেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। দেশের ৯৭ শতাংশ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বেসরকারিভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তারা সেসব প্রতিষ্ঠান চালালেও নামেমাত্র বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। তা দিয়েই মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। অথচ ৩ শতাংশ সরকারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উচ্চমানের বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। এ কারণে দেশের সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করতে হবে। এ দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি।

এর আগে ৩১ ডিসেম্বর থেকে টানা ৬ দিন আমরণ অনশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করার আশ্বাস দিলে শিক্ষকরা অনশন প্রত্যাহার করেন। এর পর ৯ জানুয়ারি থেকে টানা ৮দিন আমরণ অনশন শেষে ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে শিক্ষামন্ত্রী জাতীয়কারণের প্রক্রিয়ার আশ্বাস দিলে তারাও অনশন প্রত্যাহার করে ফিরে যান।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com