শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন

ট্রাস্টের টাকা সুদসহ ফেরত দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন আইও : আইনজীবী

ই-কণ্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট::

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট থেকে নেয়া টাকা সুদসহ ফেরত দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও)। ১৭ জানুয়ারী বুধবার আদালতকে এ কথা জানালেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।

ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ম বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে এ মামলার আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদের আইনজীবী আহসান উল্লাহ এ বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জেরায় মামলার আইও টাকা ফেরতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহসান উল্লাহ আরো বলেন, জমি ও দোকান ক্রয় করতে ট্রাস্ট থেকে নেয়া ২ কোটি টাকা সুদসহ ফেরত দেয়ায় তা বেড়ে ৬ কোটি টাকা হয়েছে। যেহেতু সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে, তাই এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি। আর এ কারণে আসামিরা খালাস পেতে পারেন।

এ মামলায় প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ উপরোক্ত দুই আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।

আদালতের আদেশ অনুযায়ী আজও আদালতে উপস্থিত ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তার আইনজীবীরা আগামীকাল তার মামলা মুলতবী রাখার আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে আগামীকালের জন্য ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। এবং আগামী তারিখ পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

আগামীকাল খালেদা জিয়ার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী।

কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া পরে আইনজীবীদের জানিয়েছেন, তিনি কালও আদালতে হাজির হবেন।

আদালতে আজকের মতো মুলতবী করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আবারো এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার পক্ষে ১০ম ও শেষ দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার পক্ষে শেষ আইনজীবী সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

১৯ ডিসেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। এ দিন রাষ্ট্রপক্ষ খালেদা জিয়াসহ সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর ২০, ২১, ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর এবং ৩ , ৪, ১০ ও ১১ জানুয়ারি খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় একটি মামলা করে দুদক।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com