বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০১ পূর্বাহ্ন
এম.আর রয়েল, শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:: শ্রীনগর থেকে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া একটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানীর বিতর্কিত জমি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সাব-রেজিষ্ট্রার রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে ওই কোম্পানীর ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকরা শ্রীনগর উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার আ: খালেকের বিরুদ্ধে থনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে শ্রীনগর থানার এসআই নাজমুল অভিযোগটি তদন্তের জন্য সাব-রেজিষ্ট্রারের খাস কামরায় উপস্থিত হলে তার সাথে ক্ষতিগ্রস্থ ২০/২৫ জন গ্রাহক সেখানে হাজির হন।
এসময় তারা সার-রেজিষ্ট্রারকে রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেছেন বলে মন্তব্য করেন এবং বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পরেন। ক্ষতিগ্রস্থদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে গোপনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত জমিটি রেজিষ্ট্রি করেছেন বলে তারা অভিযোগ করেন।
ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, ২০১৩ সালে এমওয়ে কর্পোরেশন ও হারবাল লি: কোম্পানী ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে উমপাড়া এলাকায় নিজস্ব জমির উভর তিনতলা ভবনে চটকদার অফিস স্থাপন করে স্থানীয় গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এর পর থেকে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় ওই সম্পত্তি আটক করে। দু এক বছর পর গোপনে কোম্পানীটির কর্তাব্যাক্তিরা জমিটি বিক্রি করে বেশ কয়েকবার রেজিষ্ট্রি করতে এসে গ্রাহকদের বাধার মুখে ব্যর্থ হয়। প্রায় ৩ মাস পূর্বে সাব-রেজিষ্টার আ: খালেক শ্রীনগরে সাব-রেজিষ্ট্রার হিসাবে যোগদান করলে চক্রটি পুনরায় তৎপর হয়।
গত ১৫ জানুয়ারী এমওয়ে কর্পোরেশন ও হারবাল লি: কোম্পানী ওই সম্পত্তি অর্গানিক কনজ্যুমার প্রডাক্ট ও অর্গানিক কসমেটিকস এন্ড টয়লেট্রিজ কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে তা রেজিষ্ট্রি করার জন্য সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে আসলে ক্ষতিগ্রস্থরা সাব-রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তা রেজিষ্ট্রি না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং জানান, এই সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। সাব-রেজিষ্ট্রার তাদের কথা দেন মামলা চলমান অবস্থায় কোন মতেই এই জমি রেজিষ্ট্রি হবেনা। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থরা অপর একটি সূত্রে খবর পান গত সোমবার জমিটি রেজিষ্ট্রি হওয়ার কথা রয়েছে। তারা সাব-রেজিষ্ট্রারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ছুটি নিয়ে ঢাকার বাসায় আবস্থান করছেন বলে জানান। কিন্তু তিনি ঢাকায় বসে গোপনে আতাত করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে হঠাৎ করে শ্রীনগর সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে এসে ওই সম্পত্তির দলিল সম্পাদন করে দিয়ে ফের ঢাকায় চলে যান। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহক আ: সাত্তার শ্রীনগর থানায় সাব-রেজিষ্ট্রারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, আ: খালেক শ্রীনগরে সাব-রেজিষ্ট্রার হিসাবে যোগ দিয়েই বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানীর দালাল ও ভূমি দস্যুদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে। তার বিরুদ্ধে নানা রকম অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ দলিল সম্পাদনের অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েকজন দলিল লেখক অভিযোগ করেন, দলিল সম্পাদনের জন্য খাজনা রশিদ, দলিলের শতকার হার, হেবা ঘোষণা সহ নানা রকম নিজস্ব খাত তৈরি করে অবৈধ ভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাছাড়া তার দাবী পূরণ না হলে কোন দলিল রেজিষ্ট্রি করেননা।
এব্যাপারে সাব রেজিষ্ট্রার আ: খালেক তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দলিলটি সম্পাদনের জন্য চাপ ছিল।
অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীনগর থানার এসআই নাজমুল জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।