মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন

কারাগারে যেভাবে সময় কাটছে খালেদা জিয়ার

ই-কণ্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আজ শনিবার দু’দিন হল ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

শুক্রবার দিবাগত রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পাশাপাশি এবাদত-বন্দেগি করেন তিনি। আজ ভোরে ফজর নামাজ পড়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর সকালে কারা কর্তৃপক্ষের দেয়া নাস্তা করেছেন তিনি। কারাগারে তার চিকিৎসাসেবার জন্য একজন চিকিৎসকও রাখা হয়েছে। খালেদার সঙ্গে একজন ব্যক্তিগত পরিচারিকা রয়েছেন।

কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে কারাগারের মূলফটকের ভেতরে পুরনো অফিস ভবনে রাখা হয়েছে। সিনিয়র জেল সুপারের ওই অফিস কক্ষে একটি খাট, টেবিল, চেয়ার ও দুটি ফ্যান রয়েছে। দেয়া হয়েছে টেলিভিশন, তবে সেখানে দেখানো হবে শুধু বিটিভি। পাশের রুমে গ্যাসের চুলায় রান্নার ব্যবস্থাও রয়েছে।

তিনি বলেন, তার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন তার ব্যক্তিগত পরিচারিকা ফাতেমা। ভিআইপি বন্দি ও জেলকোড অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। সকালে তাকে তিনটি জাতীয় দৈনিক পড়তে দেয়া হচ্ছে। ওই সেবিকা সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে থাকবেন। এছাড়া তার চাহিদা অনুযায়ী একটি জাতীয় দৈনিক সরবরাহ করা হবে। ভিআইপিবন্দি ও জেলকোড অনুযায়ী খালেদা জিয়া সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

এর আগে শুক্রবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পরিবারের সদস্যরা। পরিত্যাক্ত ওই কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে তিনি রয়েছেন। কারা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার কারাগারে খালেদা জিয়া প্রথম রাতে ভাত, মাছ ও সবজি খেয়েছেন। সকালে কারা কর্তৃপক্ষের দেয়া রুটি-সবজি দিয়ে নাস্তা করেন তিনি। ঢাকার জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির জানান, শুক্রবার খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা দেখা করার আবেদন করেন। দুপুরের পর তাদের দেখা করানো হয়।

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে বন্দি হিসেবে কয়েদি পোশাক পরানো হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারা অধিদফতরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নিয়মানুযায়ী প্রথম দিন কয়েদি পোশাক পরানো হয় না। দ্বিতীয় দিন থেকে পরানোর নিয়ম রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।

এ ছাড়া মামলায় অন্য আসামি তার ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত। রায়ের পর পরই খালেদা জিয়াকে আদালতের পাশে নাজিমউদ্দিন রোডের লালদালানখ্যাত ২২৮ বছরের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

২০১৬ সালের ২৯ জুন থেকে ৬ হাজার ৪০০ বন্দিকে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ার রাজেন্দ্রপুরের নতুন কারাগারে স্থানান্তর করে পুরনো কারাগার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু দুই বছর ৪ মাস ১০ দিন পর দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে এই পরিত্যক্ত কারাগারেই দিন পার করছেন খালেদা জিয়া।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com