শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন
নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি:: ‘ওরা বাপে পুতে নির্যাতন করে আমার মেয়েডারে মাইরা ফেলছে’। ওগো বিচার কে করবে? আল্লাহ তুমি ওদের বিচার করে দিও। এভাবে আহাজারি করতে করতে মেয়ের শোকে বিলাপ করে কাঁদছিলো ঢাকার দোহারের কাজীর চর গ্রামে নিহত আমেনা আক্তারের মা সালেহা বেগম। মেয়ের লাশ দাফন শেষে বাড়ির উঠানে স্বজনদের সাথে বসে অঝরে কান্না করছে আমেনার মা-বাবাসহ পরিবারের লোকজন। মেয়েকে হারিয়ে পাগল প্রায় সালেহা। বাবা সিদ্দিক মিয়াও নির্বাক হয়ে বসে আছে। তাঁদের সকলেরই চোখে মুখে শোকের ছায়া। দুই মাসের অন্ত:সত্ত্বা মেয়ের জন্য তাঁদের বুক চেপে কান্না ঝড়ছে।
ঢাকার দোহারের সুতারপাড়া ইউনিয়নের কাজীরচর এলাকার আমেনা (১৯) শশুরের যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকার ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় গৃহবধু আমেনার। নিহত আমেনা উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের কাজীরচর এলাকার মো. সিদ্দিকের মেয়ে। সে দুই মাসের অন্ত:সত্ত্বা ছিলো বলে আমেনার মা সালেহা জানান।
প্রতিবেশী ও নিহতের স্বজনরা জানায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর শশুর আমেনাকে যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করে। এ ঘটনা স্বামী পানজু হাওলাদারকে জানালে সেও বাপের পক্ষ নিয়ে স্ত্রীকে গালমন্দ করে। স্বামীর অপমানের কথা সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিতে যায় আমেনা।
এ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে স্বামী ও শশুর দোহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। খবর পেয়ে আমেনার মা বাবাও সেখানে উপস্থিত হয়। এরপর তাঁকে শশুর বাড়ির লোকজন ও আমেনার পরিবারের সদস্যরা ঢাকার ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ২ টার দিকে আমেনা মারা যায়।
আমেনার পরিবারের দাবি, তাঁর শশুর খবির হাওলাদারের চরিত্র ভালো না। এর আগেও কয়েকবার পুত্রবধূকে যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব দিয়েছে। এ ঘটনার পর হতে আমেনার স্বামী ও শশুর গা ঢাকা দিয়েছে।
এ বিষয়ে দোহার থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে হত্যা না আত্মহত্যা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।