শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার:: আন্টিগাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে না পরলেও জ্যামাইকায় কিংস্টন টেস্টে তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে ক্যারিবিয়ানদের দ্বিতীয় ইনিংসে দুইশর নিচে গুঁড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। ঘুরে দাঁড়িয়ে জ্যামাইকা টেস্ট জিতে দুই ম্যাচের সিরিজে সমতা টানল তারা। কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে ম্যাচের চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে ১০১ রানে জিতেছে টাইগাররা। এর মধ্য দিয়ে ১৫ বছর ৪ মাস ১৭ দিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
জ্যামাইকা টেস্টে ১৮ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৬৮ রানে থামে বাংলাদেশ। যার ফলে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮৭ রান। বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে ওয়েস্ট ইন্ডজ। তবে তাইজুলের স্পিন ঘূর্ণিতে নাজেহাল হয়ে দুই সেশনের মধ্যে তারা অলআউট হয় ১৮৫ রানে। বাংলাদেশ তুলে নেয় ১০১ রানের বিশাল জয়।
ওয়েস্ট ইন্ডজের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনিংয়ে নামেন ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ও মিকাইল লুইস। শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। প্রথম ৪ ওভারে তুলে নেন ২৩ রান। তবে পরের ওভারেই এই জুটিকে থামান তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের বলে শাহাদাত হোসেন দীপুর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মিকাইল লুইস।
মিকাইল লুইসের বিদায়ের পর ৪ ওভার ২ বলে ২৩ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিরতি থেকে ফিরে কেসি কার্টিকে নিয়ে জুটি গড়েন ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হতে থাকে এই জুটি। অবশেষে এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিযে সাজঘরে ফিরে যান কেসি কার্টি। তার বিদায়ে ভাঙে ৩৪ রানের জুটি।
কেসি কার্টি ফিরে গেলে কাভেম হজের সঙ্গে জুটি গড়েন ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। দেখেশুনেই খেলতে থাকেন তারা। তবে বেশিদূর এগোনোর আগেই এই জুটিকে থামান তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের বলে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। আউট হওয়ার আগে করেন ৬৩ বলে ৪৩ রান। মাত্র ৭ রানের জন্য অর্ধশতক মিস করেন তিনি। তার বিদায়ে ৯২ রানে ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডজ।
ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে ফেরানোর পর আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। এবার তাইজুরের শিকার হন আলিক আথানজে। ৬ বলে মাত্র ৫ রান করে তাইজুলের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদাযে ১০৬ রানেই ৪ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
১০৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে হজ ও জাস্টিন গ্রিভস মিলে চা বিরতি পর্যন্ত ক্যারিবিয়দের টেনে নিয়ে যান। চা বিরতির পর আবারও ক্যারিবীয় শিবিরে আঘাত হানেন তাইজুল। তিনি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া হজকে এলবিডব্লিউ করে আউট করেন। ৭৫ বলে ৫৫ রান করে ফেরেন এই ব্যাটার।
তৃতীয় সেশনে প্রথমবার বল হাতে নিয়ে দ্বিতীয় বলেই উইকেট তুলে নেন তাসকিন। বোল্ড করে ফেরান গ্রিভসকে (৪৫ বলে ২০ রান)। এরপর ফাইফার তুলে নিতে বেশি সময় নেননি তাইজুল। তিনি এলবিডব্লিউ করে ফিরিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান জশুয়া দা সিলভাকে (১৮ বলে ১২ রান)। এ নিয়ে টেস্টে ১৫তমবারের মতো পাঁচ উইকেট পেলেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
খানিক বাদে তাসকিনকে বদলে হাসান মাহমুদের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মিরাজ। বল করতে এসেই প্রথম বলে আলজারি জোসেফকে বোল্ড (২১ বলে ৫ রান) করে ফেরান হাসান। এরপর তিনি কেমার রোচকেও এলবিডব্লিউ বানিয়ে আউট করেন। রিভিউ নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে আম্পায়ার্স কলের কারণে সেই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের পক্ষে আসে। ক্যারিবীয়দের শেষ ব্যাটার শামার জোসেফকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে জয় এনে দিয়েছেন নাহিদ রানা।
ব্যাটিং ব্যর্থতায় জ্যামাইকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৬৪ রানেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে মাত্র ১৬৪ রনে অলআউট করে ব্যাটিংয়ে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটে ৭০ রান করে দ্তিীয় দিনের খেলা শেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর তৃতীয় দিনে নাহিদ রানার বোলিং তোপে ১৪৬ রানেই থামে স্বাগতিকদের ইনিংস। যার ফলে ১৮ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৬৮ রানে থামে বাংলাদেশ। ২৮৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৮৫ রানেই থামল ওয়েস্ট ইন্ডজ।