মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:১২ অপরাহ্ন
নোয়াখালী প্রতিনিধি:: আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে ছাত্র-জনতা। পরে ঘরগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে একটার দিকে ফ্যাসিস্টবিরোধী স্লোগান নিয়ে বসুরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বড় রাজাপুর এলাকার কাদেরের বাড়িতে প্রবেশ করে ছাত্র-জনতা। তারা প্রথমে ভাঙচুর চালায়, এরপর আগুন ধরিয়ে দেয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাদের মতো ওবায়দুল কাদেরের এই বাড়িতেও হামলা-ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। ছয় মাস পর দ্বিতীয়বারের মতো হামলা হলো সেখানে।
স্থানীয় লোকজন জানান, বসুরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়ি হলেও তিনি এ বাড়িতে থাকতেন না। মূলত এ বাড়িতে তার ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা, তার আরেক ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহাদাত হোসেন ও মাস্টার ফজলুল কাদের মিন্টু খান থাকতেন। নোয়াখালী সফরে এলে ওবায়দুল কাদের এ বাড়িতে উঠতেন এবং দুপুরে খাওয়ার পর বিশ্রাম নিয়ে আবার চলে যেতেন।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা বলেন, গত জুলাই আগস্টের আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর যে হামলা ও নিপীড়ন চলে, তার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন এ ওবায়দুল কাদের। তার নির্দেশে নিরপরাধ ছাত্রদের হত্যা করা হয়েছে, তার নির্দেশে চলেছিল শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন। আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ অপকর্মের মূল হোতা কাদের। তিনি এখনো পালিয়ে থেকে তার দলের নেতাকর্মীদের উস্কে দিচ্ছেন এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন।
ছাত্র-জনতা আরও অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্টের পর কাদেরের ভাইয়েরা সপরিবারে পালিয়ে যাওয়ার পর কে বা কারা ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি সংস্কারের কাজ চালাচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি করেন ছাত্র-জনতা।
গণ-অভ্যুত্থানের ছয় মাস পূর্তির দিন গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও জনতার উদ্দেশে শেখ হাসিনা বক্তৃতা দেবেন বলে প্রচার করা হয়। এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গতকাল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের উদ্দেশে বুলডোজার মিছিলের ডাক দেয়।
সন্ধ্যার পর থেকে সেখানে বিপুল মানুষের সমাগম হতে থাকে। একপর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে ক্রেন ও এক্সকাভেটর এনে বাড়ি ভাঙা শুরু হয়।
একই সঙ্গে খুলনায় শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালের শেখ বাড়ি, কুষ্টিয়ায় মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ি, ভোলায় তোফায়েল আহমেদের বাড়ি, বরিশালের সেরনিয়াবাদ আবদুল্লাহর বাড়ি, কুমিল্লায় বাহাউদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালায় ছাত্র-জনতা।
এর জেরে আজ নোয়াখালীতে ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে হামলা করে ছাত্র-জনতা।