শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক : দীর্ঘ ৯ বছর পর ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ । ‘আয়নাঘরে’ নেওয়া হয়েছিল বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন ।
রবিবার দুপুর সোয়া ২টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি । এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে বিমানবন্দরে সংবর্ধনা দেন ।
রবিবার বিকালেই তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন ।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাত সাড়ে ৯টা-১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকে এবং অস্ত্রধারীরা মিলে উত্তরার একটি বাসা থেকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আমাকে তুলে নিয়ে যায় । এরপর আমাকে একটি গোপন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। জায়গাটি ছিল কবরের মতো একটি কামরার মতো । আমার মনে হয়েছিল এটি কোনও বাড়ির নিচতলা হবে। কামরাটির আয়তন হবে পাঁচ ফিট বাই ১০ ফিট । টয়লেটের জন্য জায়গাটাতে কোনও রকম একটা ব্যবস্থা ছিল । আমাকে লোহার দরজার নিচ দিয়ে খাবার দেওয়া হতো ।”
তিনি বলেন, “কামরাটির বাইরে একটি স্ট্যান্ড ফ্যান চালু থাকত এবং ছাদের সঙ্গে হাই পাওয়ার লাইট ছিল । এ ঘরটিতে আমাকে প্রায় ৬১ দিন রাখা হয় । এ সময়ে একদিনের জন্যও বের করা হয়নি । সেখানকার অন্যান্য বিষয়ে আমি বলতে চাই না । কারণ যারা এসব করেছে তারা তৎকালীন সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের ইশারায় করেছে । আমি মনে করি এসব কাজের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে কোথাও না কোথাও তাদের একদিন জবাবদিহি করতে হবে ।”
বিএনপির এ নেতা বলেন, “যেদিন আমাকে নিয়ে আসে সেদিন দুপুরে একইভাবে চোখে কালো কাপড় বেঁধে আনুমানিক ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘোরানো হয় । থামার পর আমার মনে হলো যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে । চোখে দেখতে না পারায় ঠিক বুঝতে পারিনি । সেখানে বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করল তারা । হয়তো তারা রাতের অন্ধকারের জন্য অপেক্ষা করছিল । এরপর কিছুদূর হাঁটিয়ে আবার কিছুদূর গাড়িতে করে একটা জায়গায় এনে আমাকে তোলা হয় । আমার কাছে এখন মনে হচ্ছে সেটা সীমান্তের কাছাকাছি কোনও জায়গা হবে । সেখানেও কিছু সময় অপেক্ষা করা হয় ।”
তিনি বলেন, “এতসবের পর সেখান থেকে একটি গাড়িতে করে আমাকে শিলংয়ে একটি মাটির ঘরে ফেলা হয় । পরে জানতে পারি জায়গাটির নাম গলফ লিংক । তখনও সূর্য ওঠেনি। অর্থাৎ তখনও সকাল হওয়ার বাকি ছিল ।
সালাহউদ্দিন বলেন, “এরপর আমি পরিচয় দিয়ে সকালে ভ্রমণকারীদের কাছে পুলিশে খবর দেওয়ার অনুরোধ জানাই । এরপর পুলিশ এসে আমাকে হেফাজতে নেয় ।”
তিনি জানান, “এ সময়ে আমাকে ঠিকঠাক মেডিসিন সাপ্লাই দেওয়া হয়েছে । ভালো পানি ও তিনবেলা খাবার দিয়েছে । এর বেশি তাদের বিষয়ে কিছু বলতে চাই না ।”